সুযোগ পেলেই ছোবল দেবে বিএনপি : তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৩:২৬ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২৯, ২০১৯
ফাইল ছবি

বিএনপি অনেক দুর্বল হয়ে গেছে, সুযোগ পেলেই ছোবল দেবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক এ কথা বলেন। বিএনপি হলি আর্টিসান মামলার রায়কে স্বাগত জানাতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলনে যাবে বিএনপি- বিষয়টিকে সরকার কীভাবে দেখছে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি আদালতের ব্যাপার। রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর করলেও তো তার মুক্তি মিলবে না। মানুষের ওপর আক্রমণ পরিচালনা করলে তো তার মুক্তি মেলার কোনো সম্ভাবনা নেই।’

 

 

তিনি বলেন, ‘বিএনপি অবশ্যই গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে পারে। সেটি গণতান্ত্রিক রীতি-নীতির অংশ। রাস্তায় নেমে মানুষের ওপর আক্রমণ তো গণতান্ত্রিক রীতি-নীতির অংশ নয়।’

বিএনপি আন্দোলনে না থাকলে আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, বিএনপি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। তারা কোথাও নেই, আন্দোলনে দেখাতে পারে না। এটা এক ধরনের উসকানি কি না- এ বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি মনে করি বিএনপি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে এটি বলা সমীচিন নয়। বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে অনেক দুর্বল হয়ে গেছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন গত পরশু দিন হাইকোর্টের সামনে বিএনপি যেভাবে আবার গাড়ি ভাঙচুরে নামলো- আমরা মনে করেছিলাম বিএনপি ভাঙচুর, সন্ত্রাসী, পেট্রোল বোমার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসেছে কিংবা আসবে। কিন্তু গত পরশু দিনের ঘটনা প্রমাণ করে তারা কয়দিন বিরতি দিলেও তাদের মূলনীতি সন্ত্রাস আশ্রয়ী রাজনীতি ভাঙচুরের রাজনীতি, ধ্বংসাত্মক রাজনীতি, পেট্রোল বোমার রাজনীতি থেকে তারা বেরিয়ে আসেনি। হাইকোর্টের সামনে সেটি তারা দেখিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘এই ঘটনায় এটিই প্রমাণিত হয় সুযোগ পেলেই তারা ছোবল দেবে। বিএনপি যদি সন্ত্রাসআশ্রয়ী রাজনীতি থেকে বেরিয়ে না আসে তাহলে আজকে যেভাবে বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, বিএনপির এই জনবিচ্ছিন্নতা আরও বাড়বে। তারা যে আজকে জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তারা ভবিষ্যতে জনগণের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত হবে।’

বিএনপি হলি আর্টিসান মামলার রায়কে স্বাগত জানাতে ব্যর্থ

অতীতে যখনই কোনো জঙ্গি গ্রেফতার বা এনকাউন্টারে মারা গেছে বিএনপি এটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তাদের যে বিশ দলীয় জোট, এটি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে কয়দলীয় জোট আছে সেটি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব জানেন কি না জানি না। সেই জোটের মধ্যেও বহু নেতা আছেন যাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশকে একটি তালেবানি রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করা।’

‘সেই ঘটনা প্রবাহের ধারাবাহিকতায় আমরা গতকাল (বুধবার) অবাক বিস্ময়ে দেখলাম, গতকাল হলি আর্টিসান হত্যাকাণ্ডের ঐতিহাসিক রায় হয়েছে। এই রায় যে, বাংলাদেশে জঙ্গি দমনে সহায়ক হবে তা নয়, আমি মনে করি এই রায় বিশ্ব প্রেক্ষাপটে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রায়।’

সমগ্র দেশের মানুষ হলি আর্টিসান মামলার রায়কে স্বাগত জানিয়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি এই রায়কে স্বাগত জানাতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা অবাক বিস্ময়ে এটি লক্ষ্য করলাম। এতেই প্রমাণিত হয় তারা শুধু সন্ত্রাসআশ্রয়ী রাজনীতি করে না, তারা যে জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় সেই রাজনীতি থেকেও তারা বেরিয়ে আসেনি। এটি অত্যন্ত আশ্চর্যজনক ও দুঃখজনক।’

আসামির মাথায় আইএস টুপি: তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা

হলি আর্টিজান মামলার রায় ঘোষণার সময় দুই আসামির মাথায় আইএসের টুপি ছিল। এ বিষয়ে কী জানা গেল- এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিদেশে আছেন, আমি তার সঙ্গেও কথা বলেছি। যেহেতু বিষয়টি তদন্তনাধীন এজন্য বিষয়টি নিয়ে আমি এর বাইরে কিছু বলতে চাই না।’

বিষয়টি অ্যালার্মিং মনে করছেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই নয়। কারণ আমাদের দেশে আমরা যেভাবে জঙ্গি দমন করতে পেরেছি, পৃথিবীর অনেক উন্নত রাষ্ট্র এভাবে জঙ্গি দমন করতে পারেনি। এটি নিয়ে গভীর উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। তবে এটির সঙ্গে কী বিষয় যুক্ত সেটির তদন্ত হচ্ছে, তদন্তে যেটি বেরিয়ে আসবে সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া এমন টুপি পাওয়ার সুযোগ নেই, আপনারা কী মনে করছেন প্রশাসনে তাদের সমর্থকরা ঘাপটি মেরে আছেন- এ বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সেটি এখনই বলা সমীচীন হবে না। কারণ বন্দীদের টুপি দেয়া হয়, সেই টুপিতে নিজেরা কোনো কিছু এঁকেছে কি না, সেটিও একটি প্রশ্ন থাকে।’