পদ ফিরে পেতে পারেন শোভন

প্রকাশিত: ১:০৬ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৯

ছাত্রলীগের সভাপতি পদপার্থী ছিলো ১০০০ অধিক। প্রধানমন্ত্রী যখন শোভনের বায়োডাটা দেখেন তখন বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘শামসুল হক কাকার নাতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে? আমি জানতাম না!’

প্রধানমন্ত্রী অন্য কারো বায়োডাটা আর নাড়াচাড়া করেনি। শোভনকেই তার মনে ধরেছিলো। শামসুল হক চৌধুরী ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর। রণাঙ্গনে লড়াকু একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং সংগঠক। তিনবারের নির্বাচিত এম.পি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সবাই যখন মোস্তাক গং এর সাথে যোগ দিয়েছিলেনন, তখন শামসুল হক চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধরে রেখেছিলো।শোভনের বাবা নুরুন্নবী চৌধুরী একজন তূণমূলের রাজনৈতিক কর্মী। বর্তমানে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান। কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলোর মানুষ জানে তাদের পরিবার কেমন সৎ ও নির্ভীক। ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার পর সাংবাদিক শোভনকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘আপনি তো ছাত্রলীগের পরিচিত মুখ না। তবুও আপনি কিভাবে ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হলেন। শোভন উত্তর দিয়েছিলেন, আমি আসলে ছাত্রলীগ সভাপতি হওয়ার জন্য কখনো ছাত্র রাজনীতি করি নাই। ছোটবেলা থেকেই রাজনৈতিক পরিবারে বড় হয়েছি। সেই থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালবাসা। বঙ্গবন্ধুকে আমি বুকে ধারণ করি। সেজন্যই ছাত্রলীগ করতাম। ডাকসু ইলেকশনে হারার পর কর্মীরা যখন ভিসির বাসা ঘেরাও করে তখন শোভন বক্তৃতায় বলে, ‘অনেক সময় রাজনীতির জন্য নিজেকে বলি দিতে হয়। তোরা এখন এইখান থেকে চলে যাবি। যদি না যাস তাহলে আমাকে তোরা ভালবাসিস না।’
ভি.পি পদে হারার পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভোটে হারার পর শোভন আমার কাছে এসেছে। আমি শোভনকে বলেছি, ভোটে হেরেছ, এবার যাও তাকে (নুরুকে) অভিনন্দন জানাও। সে তাই করেছে। আমি এজন্য শোভনকে ধন্যবাদ জানাই। সে রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। তার দাদা এমপি ছিলেন, বাবা উপজেলা চেয়ারম্যান। সে তার রাজনৈতিক উদারতা দেখিয়েছে। ও ভবিষ্যতে আরও ভালো জায়গায় যাবে।’শোভন মহসীন হলেই থাকতো। মহসীন হলে অন্যান্য সংগঠনের ছাত্ররাও থাকে। অন্তত তারা সবচেয়ে ভালো জানে শোভন কি টাইপ ছেলে। সেখানে খোঁজ নিলে কেউ বলেনি শোভন কারো সঙ্গে কখনো খারাপ ব্যবহার করেছেন বা শোভন উগ্র মেজাজের। শোভন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ছিলেন। উপচার্যের কাছে চিঠিতে সিনেট সদস্য থেকে পদত্যাগ করেন। কতটুকু শিষ্টাচার থাকলে একজন মানুষ এরকম সিদ্ধান্ত নিতে পারে তা সবার কাছে স্পষ্ট।
শোভনকে নিয়ে সবারই একমত, আসলে সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে। শোভনও তাই আজ প্রধানমন্ত্রীর বিরাগভাজন হয়েছেন। শোভনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার সবে শুরু। আওয়ামী রাজনৈতিক পরিবারের ছেলের রাজনীতি আরো অনেকদূর যাবে সেটাই কাম্য। শোভন যা ভুল করেছেন, হয়তো শুধরে নতুন করে শুরু করবেন।