বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থার দায় সরকার ও উপাচার্যের

প্রকাশিত: ১০:৪৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১২, ২০১৯

তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মাদ বলেছেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ তাড়াহুড়া করে শুরু করার যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, সেটা যে দুর্নীতিকে চাপা দেওয়ার জন্য সেটি এখন স্পষ্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন যে অচলাবস্থার তৈরি হয়েছে তার দায় সরকার ও উপাচার্যের।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আয়োজিত এক সংহতি সমাবেশে তিনি এসব বলেন।

 

আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এখন দুঃখজনক পরিস্থিতির মধ্যে আছে। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ, হল বন্ধ, ক্লাস বন্ধ, অনেকগুলো পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল সেগুলোও বন্ধ। শিক্ষার্থীদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ রকম একটি পরিস্থিতি তৈরি হলো এর জন্য কে দায়ী? আমরা সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সবাই জানি এর জন্য কারা দায়ী। এখানে মেগা প্রকল্প ঘিরে একটি দুর্নীতি হয়েছে এটা অনেকটাই প্রমাণিত। আর এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর যে আন্দোলন শুরু করেছে তা সারা দেশে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। জাবিতে যখনই অন্যায়, নির্যাতন, নিপীড়ন, ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে তখনই আন্দোলন হয়েছে।’

jagonews24

তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে দাবি করি, এই ঘটনার একটি বিশ্বাসাযোগ্য, গ্রহণযোগ্য ও মরুদ- নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার মতো তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক। এই তদন্ত কমিটি উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন, সিনেট ও জাকসু নির্বাচন ফিরিয়ে আনার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দায়িত্বে থাকলে ক্যাম্পাসকে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ের টেন্ডার প্রক্রিয়াতেই দুর্নীতি ছিল এবং উপাচার্য মনে করেছিলেন লাঠিয়াল বাহিনীকে টাকা দিয়ে সন্তুষ্ট করলেই এটি ধামাচাপা পড়ে যাবে। তাই প্রকল্পের অর্থ ছাড় হওয়ার আগেই টাকা দিয়ে লাঠিয়াল বাহিনীকে সন্তুষ্ট রাখা হয়েছে। পরে এই লাঠিয়াল বাহিনী আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।’

jagonews24

এ সময় অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ উপাচার্যের বিরুদ্ধে টাকা ভাগাভাগির অভিযোগ ও আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনার তদন্তের জন্য নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানান। এছাড়া তদন্ত চলাকালে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে সাময়িকভাবে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেয়ারও দাবি জানান।

সংহতি সমাবেশে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, বাসদের কেন্দ্রীয় বর্ধিত কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, জাবির কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, ‘রাষ্ট্রচিন্তা’র প্রতিনিধি রাখাল রাও, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সভাপতি মাসুদ রানা, ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনিক রায় প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে আন্দোলনকারীরা বুধবার বেলা ১১টায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করার ঘোষণা দেন।