চেয়ারম্যান পদে বগুড়ার একটিতে এমপি মান্নানের স্ত্রী অন্যটিতে শ্যালক

প্রকাশিত: ১১:৩১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩০, ২০১৯

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলায় বর্ধিত সভার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে।

আবার সারিয়াকান্দিতে খালোতা বোন শাহীনুর বেগমকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন।

এতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিলেও কেউ প্রকাশ্য মুখ খুলতে চাইছেন না। তারা বলছেন, এমপির চাপে তার আত্মীয়স্বজন ও ঘনিষ্ঠদের প্রার্থী করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে এমপি আবদুল মান্নান সাংবাদিকদের বলেছেন- স্ত্রী, শ্যালক ও আত্মীয়দের প্রার্থী করতে তিনি কোনো সুপারিশ বা প্রভাব সৃষ্টি করেননি।

জানা গেছে, গত সোমবার সকালে সংগঠনের কার্যালয়ে সারিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের যৌথ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাদারা মান্নানের সভাপতিত্বে সভায় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক দুলু, সহসভাপতি মন্তেজার রহমান মন্টু, রেজাউল করিম মন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মমতি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সভায় চেয়ারম্যান পদে এমপি আবদুল মান্নানের স্ত্রী সাহাদারা মান্নান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আইয়ুব তরফদার ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে এমপির খালাতো বোন শাহীনুর বেগমের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

অন্যদিকে গত রোববার বিকালে সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউল করিম শ্যাম্পোর সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন নবাব, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম বুলু, সহসভাপতি শাহিদুল বারী খান রব্বানী, অধ্যক্ষ সাইদুজ্জামান স্বপন, যুগ্ম সম্পাদক তাহেরুল ইসলাম তাহের, অধ্যক্ষ আব্দুল মালেক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সভায় চেয়ারম্যান পদে বগুড়া-১ আসনের এমপি আবদুল মান্নানের শ্যালক জেলা পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মিনহাদুজ্জামান লীটন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মেজবাউল হক জুলু ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক জান্নাতুল ফেরদৌসী রুম্পার নাম ঘোষণা করা হয়।

এ দিকে দুটি উপজেলায় একক প্রার্থী চূড়ান্ত করায় ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয়। এ ব্যাপারে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস করছেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতাকর্মীরা জানান, এমপির চাপের বা তাকে খুশি করতেই ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে এমপির আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠদের একক প্রার্থী করা হয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় স্থানীয়ভাবে ভোটের মাধ্যমে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। অন্যথায় এর প্রভাব ভোটের ওপর পড়বে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন।

এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন নবাব জানান, তিনি দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ করে জেলা আওয়ামী লীগে এসেছেন। জেলা পরিষদে সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন কিন্তু এমপির প্রতি সম্মান জানিয়ে তার আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠজনকে ছাড় দিয়েছেন।

এবার সোনাতলা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তৃণমূলের মতামত ছাড়াই এমপির শ্যালককে একক প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

তিনি আরও বলেন, এভাবে নয়, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির মাধ্যমে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হোক। সেখান থেকে যাকে মনোনয়ন দেয়া হবে তিনিই প্রার্থী হবেন। সেদিনের বর্ধিত সভায় উপস্থিত থাকলেও হট্টগোলের আশঙ্কায় তিনি সভা থেকে চলে এসেছেন।