কাজের বিল না পেয়ে ইউপি সদস্যের রাস্তা খনন!

প্রকাশিত: ১:০৪ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৩, ২০১৯

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় এলজিএসপি প্রকল্পের আওতায় রাস্তা নির্মাণের কাজ করে বিল পেতে রাস্তায় গর্ত করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করলেন ইউপি সদস্য।

 

মঙ্গলবার উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের চকগোয়াশ কুলপাড়ায় এমন কাণ্ডটি করেন ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন বাদশা।

তবে ইউপি সদস্য বাদশার দাবি নির্মিত রাস্তার কাজের চুড়ান্ত পরিদর্শন শেষ না হতেই দশচাকা বিশিষ্ট ভারি যানবাহন চলাচল করে রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্থ করছে। এতে জামানতসহ তার কাজের বিল না পাওয়ার শংকা রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, রাস্তা নির্মাণ কর্মসূচির লোকজন দিয়ে রাস্তাটি খুঁড়ে গর্ত করায় ওই রাস্তা দিয়ে কোনো ধরনের যান চলাচল করতে পারছে না। ফলে পায়ে হেঁটে ছাড়া কোনো যানবাহন নিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে না পারায় দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সাদিমারা বটতলা-স্বরাপপুর রেলগেট সড়ক থেকে চকগোয়াশ কুলাপাড়া গ্রামের মধ্যে রাস্তাটি প্রবেশ করেছে। কিছুদিন পূর্বে রাস্তাটির কিছু অংশ এইচবিবিকরণ করা হয়েছে। পূর্বদিকে রাস্তার শেষাংশের মাঝখানে মাটি খুঁড়ে প্রায় তিন ফুট গর্ত করা হয়েছে। এতে যান চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। তবে পাশের একটি সড়ক সংস্কারের কাজে বালিবাহী ভারী যানবাহন নতুন এ রাস্তা দিয়ে চলাচলের কারণে রাস্তাটি বেশকিছু স্থানে দেবে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের লোকাল গভর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রোজেক্ট-৩ (এলজিএসপি) এর আওতায় উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের অধীনে চকগোয়াস কুলপাড়ায় ৫৭ দশমিক ৮ মিটার রাস্তার কাজ বাস্তবায়নে দেড় লাখ টাকা বরাদ্দ হয়। কাজটি করেন ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন বাদশা।

প্রায় তিনমাস পূর্বে রাস্তার কাজ শেষ হলেও চুড়ান্ত পরিদর্শনের অপেক্ষায় আছে রাস্তাটি। আর এ পরিদর্শন শেষ হলে কাজের বিল ও জামানতের অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন ওই ইউপি সদস্য।

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য বাদশা বলেন, নির্মিত এই লোকাল রাস্তা দিয়ে ভারি যান চলাচল করার কোনো নিয়ম নাই। এরপরও পাশের একটি রাস্তার কাজের জন্য দশচাকা বিশিষ্ট গাড়ি বালিভর্তি করে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে রাস্তাটি নষ্ট করছে। ওই রাস্তা দিয়ে ভারি যান চলাচল করতে নিষেধ করা হলেও তা মানছে না। এছাড়াও লাল পতাকা দেয়া হলে তারও তোয়াক্কা করেনি।

তিনি বলেন, বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করার পরও বাঁশ সরিয়ে দিয়ে ভারি এসব যানবাহন মালামালসহ যাতায়াত করছে। কিন্তু নতুন রাস্তাটি যেহেতু এখনও চুড়ান্ত পরিদর্শন হয়নি। তাই এসব গাড়ি চলাচলের ফলে রাস্তাটি নষ্ট হলে জামানতসহ তার বিল আটকে যেতে পারে। পরিদর্শন হলে ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তায় আবারও তাকে কাজ করতে হতে পারে। এতে তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।

ওই ভারি যান চলাচল বন্ধ করতে তিনি কর্মসূচির লোক দিয়ে গর্তটি করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে তিনি তার লোকজনকে পাশ দিয়ে ভ্যান যাতায়াতের জায়গা রেখে ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধের জন্য গর্ত করতে বললেও তারা বেশি পরিমান গর্ত করেছেন বলেও জানান।

এ ব্যাপারে নবাগত ইউএনও প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, রাস্তা গর্তের বিষয়টি তিনি জেনেছেন। দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।