আ.লীগের কাউন্সিল নিয়ে হতাশ ফখরুল

প্রকাশিত: ৪:২৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২১, ২০১৯

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২১তম কাউন্সিল নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে চলমান সংকট উত্তরণে কোনো দিকনির্দেশনা নেই’।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল নিয়ে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ হতাশা ব্যক্ত করেন।

ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রহীন একটা অবস্থা, সংবিধানকে পুরোপুরি নস্যাৎ করে উপেক্ষা এবং একদলীয় একটা শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ প্রায় এক দশক ধরে কাজ করছে। আমরা তাদের সম্মেলনে দেখতে পেলাম, সেই কথাগুলোই আবার সামনে এসেছে। ফলে জাতি সম্পূর্ণভাবে হতাশ হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘জাতির একটা প্রত্যাশা ছিল যে, হয়তোবা কাউন্সিলের মাধ্যমে গণতন্ত্র উত্তরণের একটা পথ দেখা যাবে। কিন্তু তাদের (আওয়ামী লীগ) সম্মেলনে সেই পথ তারা দেখাতে পারেনি। সে সঙ্গে সম্মেলনে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক উন্নয়ন, রাজনৈতিক যে উন্নয়ন এ সংকট উত্তরণের জন্য কোনো দিকনির্দেশনা দিতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।’

ফখরুল বলেন, ‘এখানে ব্যক্তি ও দলের প্রশংসা যেটাকে আমরা বলি, বন্ধনা করা হয়েছে। কিন্তু জাতির যে সংকট সেই সংকট উত্তরণের জন্য বেশি কিছু এই সম্মেলনে আসেনি।’

তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের যে অবস্থান অর্থাৎ একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবার লক্ষ্যে তারা এগিয়ে যাচ্ছে। জনগণের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা যেটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সেটা উপেক্ষা করা হচ্ছে।’

 

বিএনপির কাউন্সিল কবে হবে? এমন প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, আমরা একটা প্রচণ্ড বৈরী ও প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে দিয়ে রাজনীতি করছি। আমাদের রাজনীতির যে স্পেস দরকার আমরা এখানে পাচ্ছি না। যার ফলে আমাদের যে স্বাভাবিক কার্যক্রম সেটা আমরা পরিচালনা করতে পারি না। বেশিরভাগ জায়গায় আমাদের কাউন্সিল করতে দেয়া হয় না। বিশেষ করে জেলা ও উপজেলাগুলোতে। এর মধ্যেও আমরা কাজ করছি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমাদের সংগঠনকে গুছিয়ে আনা হচ্ছে। আমরা যত দ্রুততর সময়ে এটা শেষ করব এবং এরমধ্যেই হয়তোবা আমরা কাউন্সিল করার চেষ্টা করব।’

রাজাকারের তালিকায় ভুল-ভ্রান্তির পেছনে বিএনপি ও জামায়াত জড়িত রয়েছে সরকারের এক মন্ত্রীর এরকম বক্তব্যে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এসব হচ্ছে সব ব্যর্থতার দায় অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া, বিষয়টা পুরনো। এটা নতুন না। এটা আওয়ামী লীগের চরিত্র। সেভাবে সব সময় তাদের ব্যর্থতা, তাদের অপরাধ অন্যের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করে। আমি তো যেটা মনে করি, আসলে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় অপরাধ যেটা করছে, বাংলাদেশের মানুষের যে স্বপ্ন যে আকাঙ্ক্ষা একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, একটা বৈষম্যহীন অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করা, সেটাকে তারা পুরোপুরিভাবে বিনষ্ট করে দিয়েছে।’

এর আগে, সদ্য প্রয়াত দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, কাউন্সিলের সদস্য এবং জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান কবীর মুরাদের স্মরণে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। জিয়া পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খানের সভাপতিত্বে ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব আবদুল্লাহিল মাসুদের পরিচালনায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মরহুমের জীবন-কর্ম তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন এবং তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

মিলাদ মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, উলামা দলের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার, জিয়া পরিষদের অধ্যাপক এমতাজ হোসেন, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক আবদুল কালাম আজাদসহ নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।