বাগমারায় জোড়া খুনের মামলায় ৩ জনের ফাঁসির আদেশ

প্রকাশিত: ৫:৫২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯

 

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, নিহত আকলিমা বেগমের দেবর আবুল হোসেন মাস্টার (৫২), দুর্গাপুর উপজেলার আলীপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে হাবিবুর রহমান হাবিব (৪০) ও দুর্গাপুর উপজেলার দেবীপুর গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে, চাকরিচ্যুত বিজিবি সদস্য আবদুর রাজ্জাক (৩৫)। এদের মধ্যে আবুল হোসেন বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং দেউলা রানী রিভারভিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, দুর্গাপুর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের আতাউর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ আল কাফি (২২), একই গ্রামের লবির উদ্দিনের ছেলে রুহুল আমিন (৩০), দুর্গাপুরের খিদ্রকাশিপুর গ্রামের ছাবের আলীর ছেলে রুস্তম আলী (২৬) এবং খিদ্রলক্ষ্মীপুর গ্রামের মনিরুল ইসলাম ওরফে মনির (২৩)। এদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরা সবাই ভাড়াটে খুনি হিসেবে এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু বলেন, ‘গত এপ্রিলে আলোচিত মামলাটি জেলা জজ আদালত থেকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আসে। মোট ৫১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ এবং উভয়পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন বিজ্ঞ বিচারক।’

আদালত সূত্রে জানা গেছে, বাগমারার দেউলা গ্রামের নিজ বাড়িতে ২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর রাতে আকলিমা বেগম ও তার ছেলে জাহিদ হাসানকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আকলিমার বড় ছেলে দুলাল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে বাগমারা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় নানা মোড় নেয় এই জোড়া খুনের তদন্ত। তিন দফা বদল করা হয় তদন্ত কর্মকর্তা। সর্বশেষ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটির তদন্ত করে। এরপর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য বেরিয়ে আসে।

তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৩১ মে পিবিআইয়ের পরিদর্শক আলমগীর হোসেন এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে সাতজনকে অভিযুক্ত করা হয়।

আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু বলেন, ‘এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী দুইজন। এরা হলেন, নিহত আকলিমা বেগমের দেবর আবুল হোসেন মাস্টার (৫২) এবং হাবিবুর রহমান হাবিব (৪০)। এ মামলায় তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। তারা আবুল হোসেন ও হাবিবুর রহমানকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে উল্লেখ করেন।

 

নিহত আকলিমা বেগমের বড় ছেলে দুলাল হোসেন জানান, ছোটবেলায় তার বাবা মারা যাওয়ার পর চাচা আবুল হোসেনই সব সম্পত্তির দেখাশোনা করতেন। দিনে দিনে তারা বড় হয়ে ওঠেন। ২০১৪ সালে তার ভাই জাহিদ হাসান রাজশাহী কলেজ থেকে দর্শন বিভাগে মাস্টার্স শেষ করেন। চাচা আবুল হোসেনের পর তার ভাই জাহিদ ছিলো একমাত্র উচ্চ শিক্ষিত। বিষয়টি মেনে নিতে পারতেন না চাচা। জাহিদ পড়াশোনা শেষ করে চাচার কাছ থেকে সব সম্পত্তি বুঝে নিতে চায়। এ নিয়ে চাচার সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিলো। এ দ্বন্দ্বের জের ধরে তার মা ও ভাইকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে।

এ রায়ে সন্তষ্টি প্রকাশ করে দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান তিনি।