ট্রেন মিস করা কিশোরীকে সারারাত পালাক্রমে ধর্ষণ

প্রকাশিত: ২:০০ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১০, ২০২০

চলন্ত ট্রেন থেকে নামিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ তুলে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ থানায় ৪ জনকে আসামি করে মামলা করেছে এক কিশোরী। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ

অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মাতব্বররা বৈঠকে বসে গণধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন ধর্ষকদের কাছ থেকে।

শুক্রবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে কালীগঞ্জ প্রেসক্লাব এলাকা থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয় কালীগঞ্জ থানা পুলিশ।

পুলিশ ও ওই কিশোরী জানায়, রংপুরের কাউনিয়া এলাকার মামার বাড়ি থেকে এতিম কিশোরী (১৫) গত সোমবার (৫ অক্টোবর) লালমনিরহাটের পাটগ্রামে খালার বাড়ি বেড়াতে আসে। সেখান থেকে পরদিন সন্ধ্যায় লালমনিরহাটগামী আন্তঃনগর করতোয়া এক্সপ্রেস ট্রেনে কাউনিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ট্রেন কালীগঞ্জের কাকিনা স্টেশনে দাঁড়ালে ওই কিশোরী পানি নিতে ট্রেন থেকে নেমে পড়ে।

এ সময় কাকিনা স্টেশনে নিজেকে রকি পরিচয় দিয়ে এক ছেলে জানতে চাইলে ওই কিশোরী কাউনিয়া যাচ্ছে বলে পরিচয় দিলে যুবক রকিও নিজেকে কাউনিয়ার বাসিন্দা বলে পরিচয় দেয়। এরই মাঝে ট্রেন স্টেশন ছেড়ে গেলে রকি অটোরিকশা যোগে কাউনিয়া যাবেন এবং সেই অটোরিকশায় তাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।

সেই মোতাবেক একটি অটোরিকশাযোগে রকি নামের ওই যুবক কিশোরীকে নিয়ে কাউনিয়া যাওয়ার কথা বলে বিভিন্ন সড়কের ঘুরে মধ্যরাতে একটি সেচ পাম্পের নির্জন ঘরে নিয়ে রকির আরও তিন বন্ধুসহ চার যুবক মিলে পালাক্রমে কিশোরীকে ধর্ষণ করে।

পরদিন বুধবার (৭ অক্টোবর) সকালে মুখ না খোলার শর্তে কিশোরীকে মুক্তি দেয় চার যুবক। পরে অসুস্থ কিশোরী পথ ভুলে চলতে থাকলে স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে বিষয়টি স্বীকার করে সে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় এক গ্রাম পুলিশ সদস্যের বাড়িতে আশ্রয় নেয় ওই কিশোরী।

বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) রাতে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মাতব্বররা বৈঠকে বসে ধর্ষণকারী যুবকদের শনাক্ত করে মোটা অংকের টাকা জরিমানা আদায় করেন বলেও ওই কিশোরী দাবি করে।

জরিমানার টাকা কিশোরীকে না দিয়ে উল্টো তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে পথখরচ দুই হাজার টাকা দিয়ে মাতব্বররা তাকে পাঠিয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন ধর্ষিতা।

পরে শুক্রবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে স্থানীয়দের মাধ্যমে ওই কিশোরী কালীগঞ্জ প্রেসক্লাবে আশ্রয় নেয়। প্রেসক্লাবে ঘটনার লোমহর্ষক এ বর্ণনা শুনে সাংবাদিকরা থানা পুলিশকে অবগত করলে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।

ধর্ষিতার দেয়া তথ্যমতে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ। রাত ৯টার দিকে ৪ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) ফরহাদ হোসেন বলেন, কিশোরীর দেয়া তথ্যের প্রাথমিক তদন্ত করে একটি মামলা নেয়া হয়েছে। আসামিদের মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে মাঠে পুলিশ নেমেছেন। দ্রুত বাকি আসামিদের ধরা হবে বলেও তিনি জানান।