ইসির বিধি মেনে চলতে মন্ত্রী-এমপিদের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

প্রকাশিত: ৪:১৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ২, ২০১৯

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আচরণবিধি মেনে চলতে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রী ও দলীয় সংসদ সদস্যদের নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচন চলছে; আমাদের যারা মন্ত্রী-এমপি তারা যেন কোনও অবস্থাতেই যার যার নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়-এমন কোনও কর্মকাণ্ডে জড়িত না হন- এটা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পরিস্কার নির্দেশনা।

‌‌‘আমাদের সভাপতির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সকলকে এ ব্যাপারে জানাতে চাই, অবগত করতে চাই।’

উপজেলা নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে কোনও সংঘাতের আশঙ্কা করছেন কি না- এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনেকেরই আশঙ্কা ছিল যে- ‘কমপিটিশন ওপেন’ করে দেয়ার পর সংঘাত-সহিংসতা হবে।

‘সিটি করপোরেশনের ৩৬টি ওয়ার্ডে যে কাউন্সিলর ইলেকশন হয়েছে, অনেক প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। তারপরও খারাপ কোনও ঘটনা, কোন ‘ইনসিডেন্ট’ কোথাও ঘটেনি।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, উপজেলা নির্বাচন একেবারেই ‘পারফেক্ট’ হবে এটা আমি মনে করি না। ‘পারফেক্ট’ বিষয়টা ভিন্ন বিষয়। কোনও বিষয়কে পারফেক্ট বলা ঠিক না। ভুল-ক্রটি থাকে। ভুল-ক্রটি নিয়েই আমরা এগিয়ে যাই।

তিনি বলেন, আমাদের গণতন্ত্রকে পুরোপুরি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার আগে কিছু কিছু ভুল-ক্রটিও অতিক্রম করতে হবে।

‘আমরা ইলেকশন করতে করতে, একটা সময় দেখা যাবে গণতন্ত্র ‘ইনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেসির’ রূপ নিয়েছে। যেকারণে এই ধরনের ক্রটি বিচ্যুতির যে বিষয়গুলো- তখন আর কারও নজরে আসবে না বা এই ধরনের ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি হবে না।’

উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে দলীয় কোনও সিদ্ধান্ত আছে কিন না- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিদ্রোহীদের ব্যাপারে সিটি করপোরেশনেও ‘ইনিশিয়ালি’ মনে করেছিলাম, আমরা একক প্রার্থী দেব। কিন্তু সেখানে আমরা ‘ওপেন’ করে দিয়েছি।

‘আবার উপজেলা নির্বাচনে আমরা ভাইস চেয়ারম্যান পদ কিন্তু ‘ওপেন’ করে দিয়েছি। নির্বাচনটা জমজমাট একটা নির্বাচন হোক। আর বিএনপি না চাইলেও তাদের অংশগ্রহণটা কিন্তু গত দুইটি ধাপে বিশেষভাবে লক্ষ্য করেছি।’

তিনি বলেন, বিএনপির অনেকেই তাদের মনোয়নপত্র জমা দিয়েছে। কাজেই তাদের বারণ তৃণমূলে শোনেনি। এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। বিএনপি না আসলে তো নির্বাচন বন্ধ থাকবে না, সংবিধানও বন্ধ থাকবে না। আশা করি ভাল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আশা করেছিলাম আমাদের এখন যে বিরোধী দল সংসদে আছেন এবং তারা যে ধরনের মানসিকতা নিয়ে ‘অপজিশনের রোল প্লে’ করার অঙ্গীকার করেছিল, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েও তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে সেই অঙ্গীকারের প্রতিফলনটা দেখা যায়নি। তাহলে নির্বাচনটা আরও জমতো।

ভোটার উপস্থিতি কম থাকার পরও বিপুল ভোটের ব্যবধানে মেয়র পদে নৌকার প্রার্থীর বিজয়ের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভোটের দিন মেঘলাভাব কেটে যাওয়ার পর ভোটার ‘টার্ন আউট’ বেড়েছে। ভোটও বেড়েছে। তাই বিকেল বেলা ভোট বেশি পড়েছে।

‘সকাল বেলা মেঘলা আকাশ বা দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ছিল, এর মধ্যে অনেকে আসতে পারেননি। তারা কিন্তু দুপুরের পর থেকে আসতে শুরু করেছিল। এটা তো গণমাধ্যমে আপনারাই রিপোর্ট করেছেন।’

চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রকাশিত প্রার্থী তালিকার কিছু প্রার্থীর বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ী হিসাবে মাদকের মামলাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, শুক্রবারের যে তালিকা প্রকাশ করেছি, প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত চিঠি পরিবর্তন করার একটা সময় আছে। এই সময়সীমা পর্যন্ত আমরা খোঁজখবর নিই। অভিযোগ থাকলে খতিয়ে দেখি, তদন্ত করি। অভিযোগ যদি সত্য হয়, তাহলে আমরা কিন্তু আমাদের প্রার্থী হিসাবে বাদ দিয়ে দেই।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপ দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এসএম কামাল হোসেন, আমিরুল আলম মিলন, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।