ত্রিশালে ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব, প্রধান শিক্ষক কারাগারে

প্রকাশিত: ৬:২৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৮

ময়মনসিংহে ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে ত্রিশাল সরকারি নজরুল একাডেমির প্রধান শিক্ষক মেজবাহ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত রোববার রাতে ওই ছাত্রী বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে তার বড় বোন মামলাটি দায়ের করেন। পরে রাতেই মেজবাহ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার মেজবাহ উদ্দিন ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুর রহমান। তিনি জানান, গত ২২ ডিসেম্বর সকালে সরকারি নজরুল একাডেমিতে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার জন্য স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষক মেজবাহ উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করে ওই ছাত্রী। এ সময় তিনি তাকে কুপ্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় প্রধান শিক্ষক মেজবাহ উদ্দিন তাকে ভর্তি করাবেন না বলে জানান। পরে ওই দিনই দুপুর ২টায় ওই ছাত্রীর বড় বোন গিয়ে মেজবাহের সঙ্গে দেখা করেন। স্কুলে ভর্তি না করালে ছাড়পত্র দিয়ে দিতে বলেন তার বড় বোন।

এদিকে, চলতি বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে সুমন নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছিল তার পরিবার। ছাড়পত্র চাইলে মামলাটি তুলে নিতে বলেন মেজবাহ উদ্দিন। এ ছাড়া ছাড়পত্রের জন্য তিনি ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরের দিন ২৩ ডিসেম্বরও ছাত্রীর বড় বোন তার কাছে গিয়ে বোনের ভর্তি বা ছাড়পত্র দাবি করেন। কিন্তু প্রত্যাখ্যাত হন তিনি।

এ কথা জানতে পেরে ওই ছাত্রী বিকেল ৫টায় বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে দ্রুত তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে তার স্বজনরা।

ওই রাতেই ত্রিশাল থানায় একটি মামলা করেন বড় বোন। মামলার পর রাতেই মেজবাহ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ।

গ্রেপ্তার করা শিক্ষকের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত হতে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে ফোন করা হয়। তখন নিজের পরিচয় গোপন রাখার শর্তে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘হ্যাঁ, প্রধান শিক্ষক মেজবাহ উদ্দিন ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।’

তবে, ধর্ষণ মামলার আসামি সুমন মেজবাহ উদ্দিনের কী হন, বা কী কারণে তিনি এ মামলা তুলে নিতে চাপ দিয়েছেন তা জানাতে পারেনি ওই ছাত্রীর পরিবার।

এ ঘটনায় বিচার দাবি করেছে ঘটনার শিকার ওই ছাত্রী। ওই ছাত্রী বলে, ‘অপমান করেছে। প্রথম বলছিল দিবে, কিন্তু আর দেয় নাই। অনেক খারাপ খারাপ কথা বলছে। ১০ হাজার টাকা লাগবে। আর যদি থাকো, তাইলে টাকা লাগবে না। আরো অনেক খারাপ খারাপ কথা বলছে। কারণ আমার সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করছে, আমার বোনকে অপমান করছে, থাকতে বলছে। বলছে, তোরা খারাপ। তার মানে তো আমিও খারাপ। এই জন্য ওই স্কুল থেকে আমাকে বাইর করে দিবে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চাই। আগেও চেয়েছি, কিন্তু পাইনি। এখন আবার চাই।’