![কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে সালিশ বৈঠকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা!](https://i0.wp.com/timesbd24.com/wp-content/uploads/2019/01/20.jpg?fit=600%2C400&ssl=1)
বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদে এক কিশোরীকে (১৪) বিয়ের পাত্র দেখানোর কথা বলে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ওমর ফরাজী (৩৫) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গত ৮ জানুয়ারি ধর্ষণের পর কিশোরীর পরিবার মামলা করতে চাইলে স্থানীয় প্রভাবশালীরা তাদের মামলা না করতে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে, গত সোমবার (১৪ জানুয়ারি) স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠকে ধর্ষক ওমরকে ৫০টি জুতা পেটা এবং ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য জসিম খান, চুন্নু হাওলাদার, আবুল খান, শাহজাহান খান, ওমর সরদার, শফিউদ্দীন হাওলাদারসহ স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
ধর্ষণে অভিযুক্ত ওমর ফরাজী একই এলাকার মৃত কাদের ফরাজীর ছেলে এবং তার দু’টি বিয়ে রয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, গত ৮ জানুয়ারি ওমর ওই কিশোরীকে তার বিয়ের জন্য ছেলে দেখেছে বলে জানায়। ওই ছেলে তার ঘরে বসা আছে বলে ওমর ওই কিশোরীকে তার নিজ ঘরে ডেকে নেয়। পরে ওমর জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনার পর ধর্ষিতার পরিবার মামলা করতে চাইলে তাদের বাঁধা দেয় স্থানীয় প্রভাবশালীরা। সবশেষ গত সোমবার বিকেলে ধর্ষিতার বাড়িতে শালিস বৈঠক ডাকা হয়। ওই বৈঠকে ধর্ষক ওমরের দ্বিতীয় স্ত্রী শিউল আক্তার স্বামীর বিরুদ্ধে স্বাক্ষ্য দেয়। এরপর ধর্ষক ওমরকে ৫০টি জুতাপেটা এবং ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন শালিসদাররা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুতাপেটা শুরু করার পরই দৌঁড়ে পালানোর যাওয়ার চেষ্টা করে অভিযুক্ত ধর্ষক ওমর। এরপর লোকজন ধাওয়া করে ওমরকে আটক করে ১০-১২টি জুতাপেটা করে ছেড়ে দেয়। ধর্ষিতার পরিবারের দাবী ধর্ষক ওমর ও তার পরিবারের লোকজন মামলা না করতে নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছে। তারা জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য দুলাল মোল্লা জানান, এক কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় শালিশ বৈঠক হয়েছে বলে শুনেছেন। শালিস বৈঠকে জরিমানা কিংবা জুতাপেটার কোন ঘটনা ঘটেছে কিনা তার জানা নেই।
শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান মুন্না বলেন, এ ধরনের কোন বিষয় তার জানা নেই। যদি কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে এবং ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউনিয়া থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ধর্ষণ কিংবা ধর্ষণের ঘটনায় শালিসের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। ধর্ষণের বিষয়টি তদন্ত করে ধর্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন ওসি।