১৬ বছর আগের মৃত ব্যক্তি বিক্রি করলেন জমি, সহায়তা করলেন কৃষকলীগ নেতা

প্রকাশিত: ২:৫৭ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৭, ২০২১

ময়মনসিংহের ভালুকায় সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য হাজেরা খাতুন ও কৃষকলীগ নেতা জাকির হোসেন ২০০৪ সালে মৃত দুই ব্যক্তির ওয়ারিশ সনদ জীবিত দেখিয়ে আইডি কার্ড জালিয়তি করে ১৭ কোটি টাকার জমি বিক্রির অভিযোগে ৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

একই সঙ্গে ৩ জনকে সমন পাঠিয়েছেন আদালত। পরোয়ানাভুক্ত জাকির হোসেন (২৮) উপজেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও হাজেরা খাতুন (৪৫) কাঁচিনা ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য।

বাকি পরোয়ানাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন- রফিকুল ইসলাম হিরা (৫২), সাইদুল ইসলাম (৫৫), সাইফুল ইসলাম (৫৫), আবদুল করিম (৪০), মো. মোস্তফা (৩৫)। বুধবার (৬ ডিসেম্বর) ওই ব্যক্তিদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ময়মনসিংহের ৮ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক ইমাম হাসান।

বুধবার (০৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাদী পক্ষের আইনজীবী কবির হোসেন মণ্ডল মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের পর ৮ নম্বর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমাম হাসান ৭ জনের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা এবং তিনজনের নামে সমন জারি করেন।

মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাদিগড় মৌজার ৯ একর জমির পৈতৃকসূত্রে মালিক হলেন আতাউর রহমান, শামসুল হক। তাদের মধ্যে আতাউর রহমান ও শামসুল হক মারা যান ২০০৪ সালে। ওই মৃত ব্যক্তিদের নামে ওয়ারিশ সনদ দেন হাজেরা খাতুন। একই সঙ্গে জীবিত দুই ব্যক্তি মোতাহার হোসেন ও সমর আলীর ভুয়া ওয়ারিশ সনদও দেন তিনি।

পরে মৃত দুই ব্যক্তির ওয়ারিশ সনদ ও জীবিত দুই ব্যক্তির ওয়ারিশ সনদ সত্য বলে নিশ্চিত করেন কৃষকলীগ নেতা জাকির হোসেন। পরে এসব ভুয়া ওয়ারিশ সনদ ও কাগজপত্র দিয়ে ২০১৯ সালের ১৩ মে ঢাকার ম্যাক্স নাহার ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি কোম্পানির মালিক মাহমুদুর রহমান চৌধুরীর নামে ৯ একর জমি ১৭ কোটি টাকা মূল্যে আমমোক্তারনামা ও বন্ধকী দলিল করেন ভালুকা সাবরেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলম। এই দলিল দুটির শনাক্তকারী ছিলেন দলিল লেখক সমিতির সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম।

পরে তারা স্থানীয় নায়েবের মাধ্যমে কৌশলে ৯ একর জমির ২১৬৮ ও ২১৬৯ নম্বরের দুটি নামজারি ও জমা খারিজ করেন। কিছুদিন পর এক ইউপি সদস্যের মাধ্যমে ঘটনা জানতে পারেন জমির প্রকৃত মালিক হাফিজুল ইসলাম। এরপর তিনি একই বছরের ১৫ অক্টোবর ১২ জনকে আসামি করে জালিয়াতিসহ আরও কয়েকটি ধারায় মামলা করেন।

পরে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। পিবিআই তদন্তের পর ১২ জনের মধ্যে ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে।