হাতের টানে উঠে যাচ্ছে ৩০ কোটি টাকার রাস্তা

প্রকাশিত: ১১:০০ অপরাহ্ণ, জুন ২২, ২০১৯

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১৮ ফুট প্রশস্ত রাস্তার কারপেটিং হাত দিয়ে টেনে তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে নিম্নমানের সেই কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন তারা। পুনরায় সেই সড়ক নির্মাণের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহসহ সেতুমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা গেছে, বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় আগৈলঝাড়া উপজেলা সদর থেকে রাজিহার হয়ে ঘোষেরহাট পর্যন্ত বরিশাল অংশে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি কালভার্টসহ ১৮ ফুট প্রশস্তের ১২ দশমিক ৭০ কিলোমিটার  সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। এই কাজটি করেছে বরিশালের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মাহফুজ খান। সওজ বিভাগের একই কার্যাদেশে ওই প্রতিষ্ঠান আগৈলঝাড়া উপজেলায় বিভিন্ন সড়ক উন্নয়নে আরও প্রায় ৫৮ কোটি টাকার প্রকল্পর কাজ বাস্তবায়ন করছে।

বরিশালের উত্তরে ২০ কিলোমিটার অংশে ১ নম্বর খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের বাকাই সুধীর মেম্বারের বাড়ির সামনের ব্রিজ থেকে বাকাই ফিরোজার মোড় পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের কাজ করা হচ্ছে।

এই কাজ নিম্নমানের হয়েছে বলে জানান ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সুধীর রঞ্জন ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য কাওসার আহম্মেদ মানিকসহ বিক্ষুব্ধ লোকজন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, স্থানীয় লোকজন সংবাদ কর্মীদের উপস্থিতিতে রাস্তার কারপেটিং হাত দিয়ে টেনে তুলে দেখান। এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, ওয়ার্ক অ্যাসিস্ট্যান্ট শামসুল হকের উপস্থিতিতে গত বুধবার রাস্তা ঢালাই করা হয়। তাকে ভালো করে প্রাইম করে কারপেটিং ও সিলকোড করার অনুরোধ জানালেও তা কোনো কাজে আসেনি। নিম্নমানের কাজ করার একপর্যায়ে ঠিকাদারের লোকজন স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়ে।

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ঠিকাদার মাহফুজ খান বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত হয়েছেন। লেবাররা সাইট চুক্তিতে কাজ করে। সাইট বুঝিয়ে দিয়েই তাদের দায়িত্ব শেষ হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের সুনাম-দুর্নাম নিয়ে তাদের মাথা ব্যথা নেই। নিজে প্রকল্প সাইট পরিদর্শন করে কাজের মান খারাপ হলে পুনরায় নতুন করে কাজ করবেন বলেও জানান তিনি।

প্রকল্পর কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা সড়ক বিভাগের এসও মো. আবু হানিফ মিয়া বলেন, কাজ নিয়ে সমস্যার কথা তিনি শুনেছেন। জুন মাসে ব্যস্ততার জন্য প্রতিদিন তিনি সাইটে যেতে পারছেন না। কাজের মান খারাপের জন্য ওয়ার্ক অ্যাসিস্ট্যান্ট ও ঠিকাদারের লোকজনকে ভর্ৎসনা করেছেন তিনি।

মো. আবু হানিফ মিয়া বলেন, ‘সাইট লেবার সর্দার বাবুল কন্টাকে কাজ করেন। তাকে এ জন্য শাসানো হয়েছে।’

বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গোলাম মোস্তফা জানান, বিষয়টি তিনি অবগত হয়েছেন। কাজের কোয়ালিটির ব্যাপারে কোনো আপোষ করা হবে না। কাজ খারাপ হলে ঠিকাদারকে পুনরায় কাজ করতে হবে। সময় সুযোগ করে তিনি সাইট পরিদর্শন করবেন বলেও এই প্রতিনিধিকে নিশ্চিত করেন।