সিজারের সময় কেটে গেল নবজাতকের পেট: ক্লিনিক বন্ধের নির্দেশ

প্রকাশিত: ৭:৩০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩, ২০২১

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় ইউনাইটেড মেডিক্যাল সেন্টারে প্রসূতিকে সিজার করার সময় নাবজাতকের পেট কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভূমিষ্ঠ হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর নবজাতকটির মৃত্যু হয়। শনিবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে নবজাতকের মৃত্যু হয়। এ নবজাতকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আজ ৩ জানুয়ারি সকাল থেকে শুরু হয়েছে প্রশাসনিক তৎপরতা।

প্রসূতির স্বামীর অভিযোগ, মেডিক্যাল সেন্টার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি ছিল একজন বিশেষজ্ঞ সার্জনকে দিয়ে সিজার করাবেন। অথচ প্রতিষ্ঠানের মালিক উপসহকারী মেডিক্যাল অফিসার নাজমুল হক আনাড়ি হাতে নিজেই সিজার করেন।

জানা গেছে, শুক্রবার (১ জানুয়ারি) সকালে আলমডাঙ্গা উপজেলার মাজু গ্রামের সাগর আলীর স্ত্রী রুমা খাতুনের প্রসববেদনা ওঠে। পরে তাকে আলমডাঙ্গার ইউনাইটেড মেডিক্যাল সেন্টারে ভর্তি করা হয়। দুপুরে প্রসূতির সিজার করা হয়।

রুমা খাতুনের স্বামী সাগর আলী বলেন, সিজারের সময় নবজাতকের পেট কেটে নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়। ওই অবস্থায় আমার সন্তানকে তারা গোপন কক্ষে তিন ঘণ্টা রেখে দেয়। অনেক আকুতির পর নবজাতককে মায়ের কাছে দেওয়া হয়। রাতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ আমার সন্তানকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করে। সেখানে নেওয়া হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন- আমার সন্তানকে কোনোভাবেই বাঁচানো সম্ভব নয়। পরে তাকে বাড়িতে নিয়ে যায়। একদিন পর শনিবার সন্ধ্যায় আমার সন্তান মারা গেছে।

তবে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের দাবি- সিজারের সময় পেট কাটা হয়নি। জন্মের সময় ত্রুটির কারণে শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

ইউনাইটেড ক্লিনিক সেন্টারের মালিক উপসহকারী মেডিক্যাল অফিসার নাজমুল হক বলেন, আমি নয়, প্রসূতির সিজার করেছেন ডাক্তার আবু সালেহ ইমরান ও ডাক্তার নজরুল। জন্মের সময় ত্রুটির কারণে শিশুর নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে আসে। এটা ডাক্তারের ত্রুটি নয়। এখানে কারো কিছু করার ছিল না।

আগেও বিভিন্ন সময় আলমডাঙ্গার ইউনাইটেড মেডিক্যাল সেন্টারে বেশ কয়েকজন প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। অনেক রোগী অবহেলায় কিংবা ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে। এসব অভিযোগে ক্লিনিকটি বন্ধ রাখার নির্দেশনাও দিয়েছিল উপজেলা প্রশাসন। এ ঘটনায় মারা যাওয়া নবজাতকের বাবা আলমডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ আজ রবিবার সকালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে।

নবজাতকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আজ ৩ জানুয়ারি সকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কান্তি দাস ইউনাইটেড ক্লিনিক পরিদর্শন করেন। তা ছাড়া, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাদী জিয়াউদ্দীন আহমেদ সাঈদ আগামি ৫ জানুয়ারি ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা দেন। ক্লিনিকে কয়েকজন রোগী থাকায় তিনি ২ দিন সময় দেওয়া হয়।