শিশু তুহিন হত্যা: আসামিদের পক্ষে দাঁড়াবেন না আইনজীবীরা

প্রকাশিত: ১১:১০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০১৯

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কেজাউড়া গ্রামে নৃশংস কায়দায় ৫ বছর বয়সী শিশু তুহিন খুন হয়েছে গ্রামের আধিপত্য বিস্তারের জেরে।

 

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে তুহিনের স্বজনরাই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছিল- এমনটাই বলছেন গ্রামের মানুষ। পাশবিক কায়দায় সংঘটিত এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন তারা।

শিশু তুহিনকে বাবা ও চাচা মিলেই খুন করেছেন এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার পর আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে লড়বেন না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আইনজীবীরা।

বুধবার আদালত প্রাঙ্গণে এক মানববন্ধন থেকে এ অভিমত বক্তব্য রাখেন আইনজীবী নেতৃবৃন্দ।

 

আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট হুমায়ূন মঞ্জুর বলেন, দিরাইয়ে যে পৈশাচিক ঘটনা ঘটেছে তার প্রতিক্রিয়া জানাবার ভাষা জানা নেই।

তিনি বলেন, নিহত তুহিনের মামলা তিনি নিজ খরচে চালাবেন এবং আসামিদের পক্ষে সুনামগঞ্জ আইনজীবী সমিতির কোনো সদস্য ঘাতকদের বিরুদ্ধে আদালতে দাঁড়াবেন না বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন।

জেলা আইজীবী সমিতির সভাপতি মো. চাঁন মিয়া বলেন, ঘুমন্ত শিশু তুহিনকে কোলে করে নিয়ে যায় তার বাবা, খুন করে চাচা। এমন ঘটনা বাংলাদেশের প্রথম নৃশংস হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই আমরা। এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে সে জন্য আমাদের সমাজকে পরিবর্তন করতে হবে। সমাজে যে সব সংঘাত, হিংসা এবং প্রতিপক্ষের প্রতি প্রতিহিংসা চলছে এ সব থেকে আমাদের সরে আসতে হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তুহিন হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী লড়বেন না।

সুনামগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সপার মিজানুর রহমান বলেন, শিশু তুহিন হত্যায় যারা জড়িত আমরা তাদের আইনের আওতায় এনেছি। আমরা চেষ্টা করব দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করার। এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে সে জন্য আমাদের যা যা করা প্রয়োজন তাই করব।

প্রসঙ্গত, সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের গচিয়া কেজাউড়া গ্রাম থেকে তুহিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে গ্রামের আবদুল বছির মিয়ার ছেলে।

হত্যাকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিশুটির কান, গলা ও যৌনাঙ্গ কেটে পাশবিক কায়দায় হত্যা করে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছে। শিশুটির পেটে বিদ্ধ ছিল দুটি ধারালো ছুরি। শিশুর মরদেহে বিদ্ধ ছোরা দুটির হাতলে সোলেমান ও সালাতুলের নাম লেখা ছিল।