রংপুরে শতাব্দীর সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত : মাছ চাষিদের সর্বনাশ

প্রকাশিত: ২:০৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০

শত বছরের রেকর্ড ভেঙে এক রাতের বৃষ্টির পানিতে সর্বনাশ হয়েছে মাছ চাষিদের। মাছ চাষের অন্যতম এলাকা রংপুর  নগরীর নাছনিয়া, কুকরুল, চিকলী, চকচকার বিলসহ শত শত পুকুর ও খালের মাছ পানিতে ভেসে গেছে।

সরকারিভাবে এখনো ক্ষতি নিরূপণ না হলেও মাছ চাষিদের দাবি, কয়েক কোটি টাকার মাছ প্রবল বর্ষণের পানি উপচে বের হয়ে গেছে। এর আগে গত শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রবিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৪৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়, যা রংপুরের ইতিহাসে শতাব্দীর সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ায় রংপুরে কয়েক শ’ মাছ চাষি পুঁজি হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছেন। অনেকে খাল-পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেছেন। কিন্তু স্মরণকালের বর্ষণে এবার তাঁদের চাষের মাছ বের হয়ে যাওয়ায় পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে মাছ চাষে সরকারের কাছে ভর্তুকি দাবি করেছেন।

রংপুর নগরীর নাছনিয়া বিল লিজ নিয়ে মাছ চাষ করা আজমল উদ্দিন জানান, প্রবল বর্ষণে বিলের পানি উপচে এই বিলের মাছ ভেসে গেছে। মাছ ভেসে যাওয়ায় তার কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি জানান, রংপুর সিটি করপোরেশনের কাছে বিল লিজ নিয়ে তিনি মাছ চাষ শুরু  করেছিলেন। প্রায় ৮০ লাখ টাকার মাছ ছেড়েছেন বিলে। সব মাছ বের হয়ে যাওয়ায় তিনি পথে বসার উপক্রম।

নগরীর কামাল কাছনা এলাকার নাজমুল হুদা ২২ হাজার টাকায় পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেন। প্রায় ৫০ হাজার টাকার মাছ ছাড়েন ওই পুকুরে। সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতে পুকুর উপচে সব মাছ ভেসে গেছে তার। তিনি জানান, তাঁর যা সম্বল ছিল তা এক রাতের বর্ষণেই শেষ হয়ে গেছে। তাঁর মতো  কয়েক শ মৎস্য খামারি পথে বসেছেন। তাঁরা বলছেন এখন ভর্তুকি ছাড়া জীবন বাঁচানো দায় হয়ে পড়েছে।

রংপুর বিভাগীয় মৎস্য দপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাইনার আলম বেসরকারি পর্যায়ে খামারিদের চাষ করা মাছ ভেসে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে মৎস্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারি বর্ষণ ও বন্যায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলমান রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ভর্তুকির বিষয়টি সরকারকে ভেবে দেখার অনুরোধ জানানো হবে বলেও জানান তিনি।