বস্তায় মাটি ভরে আদা চাষ করে সফল মোনায়েম হোসেন

চম্পক কুমার চম্পক কুমার

জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ

প্রকাশিত: ২:১৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩০, ২০২০

বস্তায় মাটি ভরাট করে আদা রোপন করে লাভের প্রত্যাশা করছেন নওগাঁর মোনায়েম হোসেন নামের এক বয়লার চাতাল মালিক। প্রথমত একশ বস্তায় আদা চাষ করে খরচ বাদ দিয়েও প্রায় ২৭ থেকে ২৮ হাজার টাকা লাভ করার আশা করছেন তিনি। আগামীতে পুরো বয়লার চাতাল জুড়ে ৫শ বস্তায় মাটি ভরাট করে আদা চাষের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।

নওগাঁ সদর উপজেলায় বর্ষাইল ইউনিয়নে চক আতিথা গ্রামে বেশ কিছুদিন আগে একটি বয়লার চাতাল গড়ে তোলেন। কিন্তু বর্তমানে জেলার অন্যান্য হাস্কিং চাতালের মত তাঁর চাতালটিও বন্ধ রয়েছে। ফলে লোকসানের মুখে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ব্যাংকের ঋন পর্যন্ত পরিশোধ করতে পারেন নি। ফলে ঋনের বোঝা মাথায় নিয়ে চিন্তাগ্রস্থ জীবন যাপন করছেন।

এরই মধ্যে উক্ত মোনায়েম হোসেনের ভোকেশনাল ইনষ্টিটিউটে পড়ুয়া শিক্ষার্থী হিমেল ইউটিউব-এ কোন এক দেশে বস্তায় মাটি ভরে আদা চাষের সফলতার কথা জানতে পেরে নিজেও এই উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

হিমেলের পরিকল্পনা অনুযায়ী বাবা মোনায়েম হোসেন ও মা হোসনে আরা তাদের বয়লার চাতালের একটি অংশে একশটি বস্তায় অর্ধেক মাটি ভরাট করে আদা চারা রোপন করেন। একেকটি বস্তায় ২/৩টি করে চারা রোপন করেন। প্রাথিমকভাবে মাটির সাথে কেবলমাত্র জৈব সার ব্যবহার করা হয়েছে। কোন রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় নি। পরিবারের সকল সদস্য মিলে পরিচর্যা করছেন। আদা গাছগুলো বেশ ডগমগে হয়েছে।

মোনায়েম হোসেন জানান, এই একশ বস্তা আদা চাষ করতে কেবলমাত্র বস্তা আদা চারা মিলে খরচ হয়েছে মাত্র ১ হাজার ২শ টাকা। আগামী চৈত্র মাসে এই আদা উত্তোলন করা হবে। তিনি আশা করছেন প্রতিটি বস্তায় কমপক্ষে আড়াই কে জি করে আদা উৎপাদিত হবে। এতে ঐ ১শ বস্তা থেকে আড়াইশ কে জি আদা পাওয়া যাবে। বর্তমানে কমপক্ষে পাইকারী বাজার মুল্য প্রতি কেজি ১শ ২০ টাকা। সেই হিসেবে ঐ একশ বস্তায় উৎপাদিত আদার বাজার মুল্য ৩০ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে কমপক্ষে ২৭ হাজার থেকে ২৮ হাজার টাকা নীট লাভ করতে পারবেন। আগামী বছর তার পুরো বয়লার চাতাল জুড়ে ৫শ বস্তায় আদা চাষ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। এই হিসেবে ৫শ বস্তায় আদা চাষ করে দেড় লাখ টাকারও বেশী আয় করতে পারবেন যা অন্যদের জন্য অনুকরনীয় হতে পারে।

নওগাঁ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারহানা নাজনীন জানান, বস্তায় মাটি ভরাট করে আদা চাষ করা কৃষকদের নিকট সম্পূর্ন একটি নতুন ধারনা। এই প্রক্রিয়ায় আদা চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। যদি কেউ এভাবে আদা চাষে এগিয়ে আসেন কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রযুক্তি ও প্রক্রিয়াগতভাবে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে।