বগুড়ায় ট্রেনে জন্ম নেয়া নবজাতকের পাশে আনসার ভিডিপি

মিরাজুল ইসলাম মিরাজুল ইসলাম

জেলা প্রতিনিধি, বগুড়া

প্রকাশিত: ৬:০৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৭, ২০১৯

বগুড়ায় ট্রেনে জন্ম নেয়া নবজাতক ইব্রাহিম ও তার পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন জেলা আনসার ভিডিপি কমান্ডেন্ট মুহাম্মদ মেহেদী হাসান পি.এ.এম।

তিনি বুধবার বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে গিয়ে নবাজাতকের জন্য শীতবস্ত্র, পোষাক ও নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। এসময় তিনি নবজাতক ও তার মায়ের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন।

তিনি নবজাতকের দরিদ্র পিতা ছকমল অথবা তার বড় ছেলেকে আনসার ভিডিপিতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবেন বলে জানান। এসময় হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ আব্দুল ওয়াদুদ, সোনাতলা উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা নাসিমুল ফেরেদৗস, শেরপুর উপজেলা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক উপস্থিত ছিলেন।

৯৯৯ এ ফোন করে অসুস্থ্য প্রসূতি নবিয়া বেগমকে (২৮) উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করার পর এখন সুস্থ্য রয়েছে। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন নিবির পরিচর্যা চলছে। বগুড়া ফায়ার সার্ভিস ও বগুড়া রেলওয়ে স্টেশন সুত্রে জানা যায়, লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের মো: ছকমল ও তার সন্তান সম্ভাব্য স্ত্রী নবিয়া খাতুন (২৮) ঢাকা থেকে ট্রেন যোগে বাড়ি ফিরছিলেন।

ফেরার সময় বগুড়া রেলওয়ে এলাকায় ট্রেনের মধ্যে সন্তান প্রসব করেন নবিয়া। সোমবার সকাল সাড়ে ৭ টায় ট্রেনের যাত্রীরা অসুস্থ্য দেখে প্রসুতি নবিয়া, তার স্বামী ছকমল ও নবজাতককে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য বগুড়া রেলওয়ে স্টেশনে তাদের নেমে দেয়। প্রসূতি অসুস্থ্য হওয়ায় পুত্র সন্তান কোলে নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে ছকমল।

এসময় সাগর মাহমুদ নামে এক ব্যক্তি জাতীয় সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে ঘটনাটি বলেন। খবর পেয়ে দ্র্রুত সেবা প্রদান করতে ৯৯৯ থেকে বগুড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে ফোন দেয়া হয়। ফোন পেয়ে অতি দ্রুত বগুড়া ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা অসুস্থ্য মা ও পুত্র সন্তানকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ভর্তি করে দেয়।

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহ পরিচালক ডাঃ আব্দুল ওয়াদুদ জানান, ৯৯৯ এ ফোন করলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। এখন নবজাতক পুত্র ও মা দুইজনই সুস্থ্য আছেন। প্রসূতি ও নবজাতকের নিবির পরিচর্যা চলছে। বৃহস্পতিবার তাদের ছাড়পত্র দেয়া হবে। নবজাতকের বাবা ছকমল জানান, তিনি খেটে খাওয়া মানুষ। তার আরও তিনটি সন্তান রয়েছে। এক ছেলে এসএসসি পরীক্ষা দিবে। কোনমতে তার সংসার চলে।

তার সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার পর অনেকেই আর্থিক সহায়তা করেছেন। জেলা আনসার ভিডিপি কমান্ডেন্ট মুহাম্মদ মেহেদী হাসান পি.এ.এম জানান, তিনি জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদটি দেখে বুধবার হাসপাতালে যান। সেখানে ছকমলের পরিবারের খোঁজ খবর নিয়েছেন। ঐ পরিবারকে নগদ ৫ হাজার টাকা সহায়তা করার পাশাপাশি তার অথবা তার ছেলের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন।

তিনি ইতিমধ্যেই লালমনিরহাটে আনসার ভিডিপি কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছেন। তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে ইনশাল্লাহ। এছাড়া তিনি নবজাতকের পরিবারের সবসময় খোঁজ খবর রাখবেন বলে জানান।