ফেসবুক গ্রুপে রিফাত হত্যার পরিকল্পনা, রামদা নিয়ে কলেজে থাকতে বলা হয়

প্রকাশিত: ১২:২৬ অপরাহ্ণ, জুন ২৯, ২০১৯

হঠাৎ নয়, রিফাত শরীফকে খুন করা হয় ঠাণ্ডা মাথায় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী। আর সেই কিলিং মিশনের আগে ফেসবুকে একটি গ্রুপে হত্যার পরিকল্পনা সাজানো হয়।

 

বরগুনা শহরে প্রকাশ্য রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার তদন্তের মধ্যেই আলোচনায় এসেছে ফেসবুকের এই গ্রুপটি। যার নাম ‘বন্ড 007’।

গ্রুপটি হলিউড মুভি জেমস বন্ডের কোড নম্বর ‘জিরো জিরো সেভেন’ এর সঙ্গে মিল রেখে করা হয়েছে। আর এই গ্রুপের নেতা হলেন রিফাত হত্যার মূল আসামি নয়ন বন্ড। বলা হচ্ছে, ওই ফেসবুক গ্রুপেই রিফাত হত্যার বিষয়ে সদস্যদের মাঝে কথোপকথন হয়।

কথোপকথনে দেখা যায়, রিফাত ফরাজী নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে 007 গ্রুপের সবাইকে সকাল ৯টার দিকে কলেজে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর একটি রামদার ছবি দিয়ে সেটিও নিয়ে যেতে বলা হয়। সেখানে উত্তর দিতে দেখা যায় মোহাম্মদ নামের আরেকটি আইডিকে।

ফেসবুক গ্রুপের কথোপকথন:

রিফাত ফরাজী: 007 গ্রুপের সবাইকে কলেজে দেখতে চাই।

মোহাম্মদ: কয়টায়?

(রিফাতের বক্তব্যকেই আবার রিপোস্ট করে সাগর নামের একটি আইডি। সেখানে ‘ভিক্টরি’ ইমো দেয় সে )

রিফাত ফরাজীকে ট্যাগ দিয়ে মোহাম্মদ আবার লেখে: কয়টায় ভাই?

রিফাত ফরাজী: ৯টার দিকে।

এরপর রিফাত ফরাজী একটি দায়ের ছবি পোস্ট করে। বলে: পারলে এইটা সহ।

মোহাম্মদ: দা নিয়া আমুনে।

রিফাত: আচ্ছা।

মোহাম্মদ: হকিস্টিক দিয়া আমি খেলি ভাই:

রিফাত: ওহ! বাট আজ লাগবে কিন্তু:

মোহাম্মদ: হুম! বুঝি তো ভাই, মুই একটু পরে আইতেছি।

রিফাত: আচ্ছা।

রিফাত আবার বলে: 007- এর আর গুলা কই?

(এভাবেই তাদের আলাপচারিতা এগিয়ে যেতে থাকে)

জানা যায়, ‘007’ নামের গ্রুপটি চালাতেন নয়ন বন্ড। এই গ্রুপে নয়নের প্রধান সহযোগী হলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে রিফাত ফরাজী।

এলাকাবাসী বলছে, নয়নের গড়া গ্যাং 007 শহরের কলেজ রোড, ডিকেপি, দীঘির পাড়, কেজিস্কুল ও ধানসিঁড়ি এলাকায় নানা ধরনের অপরাধ চালিয়ে আসছিল। ভয়ে কেউ কিছু বলতে পারতো না।

বরগুনা সদর থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন জানান, পৌর শহরের বিকেবি রোডের ধানসিঁড়ি এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকীর ছেলে নয়নের বিরুদ্ধে মাদক কেনাবেচা, চুরি, ছিনতাই, হামলা, সন্ত্রাস সৃষ্টিসহ নানা অভিযোগে অন্তত আটটি মামলা রয়েছে।

ফেসবুক মেসেঞ্জারের ওই কথোপকথনের বিষয়ে জানতে চাইলে বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বলেন, মেসেঞ্জারের বিষয়টা ঠিক আছে। তবে তদন্তের স্বার্থে গ্রুপের বিষয়ে আমরা কোনও মন্তব্য করতে চাই না। এ ঘটনায় জড়িতদের শিগগিরই গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। তদন্ত এগিয়ে চলছে।’