ডিম ভাঙ্গার ঘটনায় এবার হাইওয়ে থানার ওসিকে প্রত্যাহার

প্রকাশিত: ৮:০২ পূর্বাহ্ণ, মে ২২, ২০১৯

ঘুষ না পেয়ে পিকআপ ভ্যানের দড়ি কেটে প্রায় ৩৫ হাজার ডিম নষ্ট করার ঘটনায় নাটোরের বনপাড়া হাইওয়ে থানার ওসি আলিম হোসেন শিকদারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার তাকে প্রত্যাহার করে বগুড়া হাইওয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।

হাইওয়ে পুলিশের বগুড়া জোনের পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ওসি আলিম হোসেন শিকদারকে বগুড়া হাইওয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে এবং বনপাড়া হাইওয়ে থানায় নতুন ওসি হিসাবে দেলোয়ার হোসেনকে পদায়ন করা হয়েছে।

 

এর আগে এই ঘটনার জেরে বনপাড়া হাইওয়ে থানার দুই কর্মকর্তাসহ ছয় পুলিশকে প্রত্যাহার করে হাইও‌য়ে বগুড়া রি‌জিয়ন সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১৬ মে ভোর রাতে একটি পিকআপ ভ্যানে ৩৫ হাজার একশ’ ডিম নিয়ে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ থেকে নাটোর যাচ্ছিল। পথে আগ্রান সূতিরপাড় এলাকায় পিকআপের চাকা পাংচার হয়ে গেলে সেটি পাশের ফিডার রোডে নেমে যায়।

খবর পেয়ে বনপাড়া হাইওয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে আসে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা পিকআপ উদ্ধারের জন্য রেকার ভাড়াসহ ২০ হাজার টাকা দাবি করে।

কিন্তু চালক এতে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশ সদস্যরা পিকআপে ডিমের খাঁচি বাঁধার রশি চাকু দিয়ে কেটে দেয়। এতে ডিমের খাঁচি রাস্তায় পড়ে অধিকাংশই ভেঙে নষ্ট হয়ে যায়।

সেদিন বেলা ১১টায় সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় নারীরা রাস্তায় পড়ে থাকা ভাঙাচোরা ডিম কুড়িয়ে নিচ্ছেন। রাস্তাজুড়ে ভাঙা ডিমের হলুদ কুসুম ছড়িয়ে রয়েছে।

ট্রাকের চালক-হেলপার ভাঙা ডিম ফেলে প্লাস্টিকের খাঁচিগুলো সংগ্রহ করছেন। রাস্তায় যত্রতত্র কেটে ফেলা রশিগুলো পড়ে রয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় পুকুরের পাহারাদার শহীদুল ইসলাম ও আতাহার আলী জানান, চালক-হেলপার বারবার অনুরোধ করা স্বত্ত্বেও পুলিশ পিকআপের রশিগুলো কেটে দিয়েছে। রশি না কাটলে ডিমগুলো নষ্ট হতো না। পুলিশ ডিমসহ পিকআপটি রেকারে করে থানায় নিয়ে গেলে কী এমন ক্ষতি হতো?

পিক-আপের চালক সিরাজগঞ্জ সদরের মজনু মিয়া জানান, আমার গাড়ির চাকা পাংচার হয়ে ফিডার রাস্তা নেমে গেলেও কোনো ডিম পড়েনি। কিন্তু পুলিশের দাবিমতো ঘুষ না দেয়ায় তারা রাগে ডিম বাঁধার রশি কেটে দেয়ায় সব ডিম রাস্তায় পড়ে গেছে।

ডিমের মালিক বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, আমি চালকের মোবাইল দিয়ে কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের সঙ্গে কথা বলেছি এবং রশি না কাটার জন্য অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা আমার কোনো কথা শুনেনি। এতে আমার পৌনে তিন লাখ টাকার ডিম নষ্ট হয়ে গেল