স্থানীয় প্রভাবশালীর নির্দেশে বাড়ীতে আগুন হামলা- ভাংচুর

ভাড়াটিয়া থেকে মালিকানা দাবি, ভাংচুর-মালামাল লুট!

মাহমুদ আহসান হাবিব মাহমুদ আহসান হাবিব

জেলা প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: ৭:৩৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২, ২০২০
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য! ‘জোর যার মুল্লুক তার’, এমনই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়পুর ইউনিয়নের ভুল্লী বাজার এলাকায় ভাড়াটিয়া সেজে মালিকানা দাবী করে প্রভাবশালী নেতার নির্দেশে বাড়ীতে আগুন, হামলা-ভাংচুর, লুৎপাট ও দখলের ঘটনায় ৭ জন আহত হয়েছেন। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এতে যে কোন মূর্হতে প্রাণহানীর ঘটনা ঘটতে পারে।
মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) রাতে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ভুল্লী বাজার এলাকায় এঘটনায় আহতরা হলেন, ইয়াকুব আলী (৬৫) সালমা বেগম (৬০) রোকেয়া বেগম (৪২) সুফিয়া বেগম (৫৩) নাসিমা আক্তার (৩৫) শহিদুল ইসলাম (৩০) ও রোমানা আফরোজ (২৩)।
জানা যায়, সদর উপজেলার জমির মালিক ইয়াকুব আলী ১৯৭৫ সাল হতে ক্রয় সুত্রে জমি ভোগদখল করে আসছেন। সেই ভোগদখলিয় জমিতে কিছু দোকান ঘর নির্মান করে চুক্তিভিত্তিক ভাড়া টিয়া নিয়োগ করেন বাহার উদ্দীন, লাভলী বেগম, ইউনুচ আলীকে । কিন্তু চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে তারা ভাড়া দিতে তালবাহানা শুরু করেন। দোকান মালিক ভাড়াটিয়াদের দোকান ছেড়ে দিতে বললে আজ দিবে কাল দিবে বলে সময় ক্ষেপন করতে থাকে।
এবিষয়ে ভাড়াটিয়াদের অনেক বার তাগদা দেয়া সত্বেও তারা ছেড়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে নিরুপায় হয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম নজুর বরবারে আবেদন দাখিল করেন। ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের জন্য গ্রাম্য আদালতের মাধ্যমে নিস্পত্তি করার জন্য উভয় পক্ষকে তলব করেন। কিন্তু বাহার উদ্দীন, লাভলী বেগম, ইউনুস আলী অত্যান্ত প্রভাবশালী হওয়ায় চেয়ারম্যানের কথার কোন কর্নপাতই করেন নি। পরে ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বাদী পক্ষের কাগজ পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন দেন। সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায় ভুল্লী বাজারের চাল ব্যবাসীয় মকবুল হোসেন বলেন, বাহার উদ্দীন, লাভলী বেগম, ইউনুস আলী ভাড়াটিয়া ছিলেন কিন্তু শুনছি আজ তারা নিজেদের মালিক দাবী করছে।
মশিউর রহমান, আহমম্মদী, স্বপনসহ আরও অনেকে বলেন, জোর যার মূল্লুক তার। এখানে আমাদের কথা বলে লাভ কি ? গত রাতে বাহার উদ্দীন, লাভলী বেগম ও ইউনুস আলী স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার নির্দেশে ইয়াকুব আলীর বাড়ীতে আগুন, হামলা-ভাংচুর, লুৎপাট ও দখল চালায়। দোকান মালিক ইয়াকুব আলী বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালীর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা আমার বাড়ী ও গুদামের তালা ভেঙ্গে আগুন, হামলা-ভাংচুর, লুৎপাট ও দখল চালায়। এবং ট্রাক্টরে করে প্রায় কোটি টাকার মালামাল নিয়ে যায়। বাহার উদ্দীন, লাভলী বেগম, ইউনুস আলী ভাড়াটিয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমরা পরবর্তীতে দোকানঘর গুলো স্থানীয় সফিউলের কাছে ক্রয় করি।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি (তদন্ত) একেএম আতিকুর রহমান বলেন, গতকাল রাত ৯৯৯ নম্বরের কলকে কেন্দ্র আমরা ভূল্লীতে গিয়ে দেখি একটি দোকান ঘরকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। উভয় পক্ষকে এজাহার দিতে বলেছি। এজাহার দিলে আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দোকান মালিক ইয়াকুব আলী থানায় গিয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।