ঘরে ঘরে পুলিশের তল্লাশি, গ্রেফতার আতঙ্ক সর্বত্র!

প্রকাশিত: ৪:০৫ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৮

স্টাফ রিপোর্টার : নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ঢাকা-১ (দোহার-নবাবগঞ্জ) আসনের নির্বাচনী পরিবেশ। আওয়ামী লীগ সমর্থক প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের অত্যাচার-হুমকিতে ঘরছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা।

জানা গেছে, দোহার উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সালাউদ্দিন মনিরকে বুধবার রাতে জয়পাড়ার বাড়ি থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এর পর থেকেই চারদিকে গ্রেফতার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার রাতেও পাড়া-মহল্লায় মটরগাড়ি মার্কার সমর্থকদের ঘরে ঘরে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। প্রাণভয়ে অনেকে গাঢাকা দিয়েছেন। আর যারা গ্রামে অবস্থান করছেন, তাদের বাসা-বাড়িতে গিয়ে মটরগাড়ির পক্ষে প্রচারণা না চালাতে আওয়ামী লীগ কর্মীরা হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে জয়পাড়া এলাকা থেকে যুগান্তরের ৫০০ কপি পত্রিকা হকারদের কাছ থেকে অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনিয়ে নেয়ার খবর পাওয়া গেছে। নবাবগঞ্জ-দোহারের বিভিন্ন স্থানে যমুনা টেলিভিশন ও যুগান্তরের গাড়ি দেখলেই তাণ্ডব চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা। বৃহস্পতিবারও একাধিক গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। এর আগে গত সোমবার সন্ত্রাসীদের হামলায় গণমাধ্যমের অন্তত ১০ জন কর্মী আহত হন। ভাংচুর করা হয় সাংবাদিকদের ১৬-১৭টি গাড়ি।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবে কিনা- তা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা কাজ করছে। এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ভীতিকর অবস্থার। সবার চোখেমুখে অজানা আতঙ্ক। ভোটের বিষয়ে কথা বলতে চাইলে কেউ ‘টুঁ’ শব্দও করতে চাচ্ছে না। সবার মুখে শুধুই আওয়ামী লীগ সমর্থকদের তাণ্ডব কথাবার্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। পুলিশের ব্যাপক তল্লাশির খবর ছড়িয়ে পড়ায় মটরগাড়ি মার্কা সমর্থকদের অনেকেই ঘরছাড়া। এমনকি মটরগাড়ি মার্কার বুথ বসাতে দিচ্ছে না নৌকা মার্কার সমর্থকরা। ভোটারদের নাম, নম্বর, কেন্দ্র সংবলিত স্লিপও বিতরণ করতে দেয়া হচ্ছে না। মটরগাড়ির ক্যাম্পে কর্মী-সমর্থকরা যাতে না বসতে পারে, সেজন্য তাদের ওপর নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।

স্বজনদের সঙ্গে ঘরে অবস্থান করতে পারছেন না- এমন অভিযোগ করে অনেকে যুগান্তরকে বলেন, প্রতিনিয়ত হুমকি পাচ্ছি। জানি না নির্বাচন পর্যন্ত টিকতে পারব কিনা, নির্বাচনের পর বাড়িঘরে থাকতে পারব কিনা। পরিবেশ স্বাভাবিক থাকলে নির্বাচনে সালমা ইসলামের পক্ষে রায় দিয়ে এ অত্যাচার-অনাচারের প্রতিবাদ করব। ঠিক উল্টো চিত্র নৌকা সমর্থকদের। নির্বিঘ্নে ভোটের মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা। ভোট দিতে প্রকাশ্যে সাধারণ ভোটারদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। মুখ চিনে চিনে ভোট চাওয়া হচ্ছে। মটরগাড়ির সমর্থকদের ভোট কেন্দ্রে না যেতে হুমকি দেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে ভোট কারচুপির নানা কৌশল আঁটছেন তারা।