গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা, ননদ আটক

প্রকাশিত: ৫:৪৬ অপরাহ্ণ, মে ৯, ২০১৯

পারিবারিক কলহ ও যৗেতুকের দাবীতে পাবনার আমিনপুরে এক গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

বৃহস্পতিবার সকালে জেলার আমিনপুর থানার ত্রিমহনী গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী সুরমান আলী মন্ডলের স্ত্রী ফজিরন আকতার শরীরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। ওই গৃহবধূকে স্থানীয় ও স্বজনরা উদ্ধার করে প্রথমে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে, পরে তার অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় পুলিশ ওই গৃহবধূর ননদ সামেলা খাতুনকে আটক করেছে।

আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম বলেন, গত ১২ বছর পূর্বে একই থানার ত্রিমহনী গ্রামের গেদা মন্ডলের ছেলে সুরমান মন্ডল ও খলিলপুর গ্রামের ফজিবর মন্ডলের মেয়ে ফজিরন আকতারের সাথে পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে হয়। বিয়ের পর সংসারে অভাব অনটন লাঘবের জন্যে মালয়েশিয়া যায়। এরই মধ্যে তাদের সংসার জীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ের জন্ম হয়। সংসার খরচের জন্যে স্বামী সুরমান মন্ডল তার বোন সামেনার নিকট টাকা পাঠাতে থাকেন। এই টাকা পাঠানোকে কেন্দ্র করেই স্ত্রীর সাথে পরিবারের লোকজনের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিনের জের ধরেগত পরশু দিনে ওই গৃহবধূ তার ননদের নিকট থেকে সংসার খরচের টাকা দেওয়া নেওয়া নিয়ে ঝগড়া বিবাদ শুরু হয়।

এরই এক পর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার ভোরে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় তার আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে। পরে তার স্বজনদের সহায়তায় সকালে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করে।

অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূর ভাই সাগর হোসেন বলেন, আমার বোনের দুটি সন্তান আছে, দুলাভাই দেশের বাহিরে অবস্থান করায় যৌতুকের জন্যে মাঝে মধ্যেই পরিবারের লোকজন আমার বোনের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন।

এদিকে দুলাভাই সংসার খরচের জন্যে তার বোনের নিকট টাকা পাঠালে, তারা সেই টাকা দিত না। আমার বোন সংসার খরচের টাকা চাইতে গেলেই উল্টো বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্যে মারপিট করতো।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসাল্টেন্ট গৌতম কুমার বলেন, অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূটির শরীরের ৬০ ভার শরীর পুড়ে গেছে, তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।

আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম আরো বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। একজনকে আটক করা হয়েছে, অন্যরা পালিয়ে আছে।