কয়েক দশকের রেকর্ড পরিমান শিলাবৃষ্টি ঠাকুরগাঁওয়ে, ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা

মাহমুদ আহসান হাবিব মাহমুদ আহসান হাবিব

জেলা প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: ১০:১৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২২

দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে বিগত কয়েক দশকের মধ্যে রেকর্ড পরিমান শিলাবৃষ্টি হয়েছে। শিলা বৃষ্টিতে জেলার বিভিন্ন স্থানে স্তুপ জমে যায় শিলার । তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন শুধু কয়েক দশক নয়, প্রায় একশ বছরেও এমন শিলাবৃষ্টি হয়নি এ অঞ্চলে।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও শহর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এই শিলাবৃষ্টি হয় বলে জানায় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
১০ থেকে ১৫ মিনিট ধরে চলা এ শিলা বৃষ্টিতে ঢেকে যায় শতশত হেক্টর ফসলের জমি। এছাড়াও আম-জামের মুকুল ঝড়ে পড়েছে এবং ভুট্টা ও আলুর সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে বলে জানান কৃষকরা।

কৃষক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানাযায়, এ অঞ্চলে বর্তমানে গম, ভুট্টা এবং বীজ আলুর চাষ বেশি হওয়ায় শিলা বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখিন হবেন ভুট্টা ও বীজ আলু চাষীরা। এছাড়াও জেলায় বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা আম ও লিচুর বাগান গুলির ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। শিলা বৃষ্টিতে লিচু ও আমের মুকুল প্রায় সিংহ ভাগই নষ্ট হয়েছে।

সদর উপজেলার নারগুন এলাকার কৃষক ময়নুল ইসলাম জানান, তিনি এবার প্রায় ৬০ বিঘা জমিতে বীজ আলুর চাষ করেছেন। এ শিলা বৃষ্টিতে তার শুধু ফসল নষ্ট হয়নি, নষ্ট হয়েছে তার স্বপ্ন।

ঠাকুরগাঁও সেনুয়া এলাকার মকছেদুর রহমান জানান, কয়েক লক্ষ টাকা ব্যায়ে তিনি দুটি আমের বাগান গড়ে তুলেছেন। শিলা বৃষ্টিতে তার সেসব বাগানের আমের মুকুল প্রায় সবই নষ্ট হয়েছে। এখন নতুন করে পরিচর্যা করেও সেসব পুনরুদ্ধার করা সম্ভব না।

শহরের বাসিন্দা শাহদাৎ হোসেন বলেন, আমি আমার জীবনের ৩৫ বছরে এমন শিলাবৃষ্টি দেখিনাই ঠাকুরগাঁওয়ে। ৮/১০ মিনিটের শিলা বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট, বাসার উঠোনে সাদা হয়ে যায়। গাছপালার সকল পাতা শিলাবৃষ্টির আঘাতে ঝড়ে পড়েছে।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আবু হোসেন বলেন, ঠাকুরগাঁও শহর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভারি মাপের শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এমন শিলা বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখন বলা সম্ভব নয়। মাঠে গিয়ে তদন্ত করে দু তিন দিনের মধ্যে ক্ষয় ক্ষতির সঠিক পরিমাপটা জানাতে পারবো। তবে ধারণা করছি, গম,বীজ আলু, শাক-সবজি, আম-লিচু এসব বেশি ক্ষতি হতে পারে।