এমসিতে গণধর্ষণ: ছাত্রলীগকর্মী রনি গ্রেফতার

প্রকাশিত: ২:৩৮ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২০

সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ মামলার অন্যতম আসামি ছাত্রলীগকর্মী শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৪) ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, এমসি কলেজ শাখার সভাপতি রবিউল হাসানকে (২৫) গ্রেফতার করা হয়েছে। এ নিয়ে চাঞ্চল্যকর এই গণধর্ষণ মামলায় একদিনে চারজনকে গ্রেফতার করল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থেকে মাহবুবুর রহমান রনিকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৯ এর বিশেষ দল। এছাড়া হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা থেকে রবিউলকে গ্রেফতার করে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ। র‌্যাব ও পুলিশের পৃথক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

গ্রেফতার মাহবুবুর রহমান রনি হবিগঞ্জ সদরের বাগুনিপাড়ার শাহ মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে আর রবিউল হাসান সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল ইউনিয়নের বড় নগদীপুর গ্রামের বাসিন্দা।

ধর্ষণ মামলার আসামি রবিউল হাসানকে গ্রেফতারের তথ্য নিশ্চিত করে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বলেন, ডিবি পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে রবিউলকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারের পর তাকে সিলেট মহানগর পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

এর আগে দেশে-বিদেশে আলোচিত এ গণধর্ষণের ঘটনায় করা মামলার এক নম্বর আসামি ছাত্রলীগকর্মী সাইফুর রহমানকে ছাতক থেকে এবং মামলার চার নম্বর আসামি অর্জুন লস্করকে মাধবপুর থেকে রোববার সকালে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই দুজন আাসামি সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে স্বামী-স্ত্রী এমসি কলেজে বেড়াতে যান। এ সময় কলেজ ক্যাম্পাস থেকে কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মী জোরপূর্বক কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়ে যায় এ দম্পতিকে। সেখানে একটি কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে তারা।

খবর পেয়ে পুলিশ গৃহবধূকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করে।

এ ঘটনায় ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও তিনজনকে আসামি করে শনিবার সকালে সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় মামলা করেন ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর স্বামী।

মামলার আসামিরা হলেন- সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার উমেদনগরের রফিকুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), হবিগঞ্জ সদরের বাগুনীপাড়ার শাহ মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), জকিগঞ্জের আটগ্রামের কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্কর (২৫), দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুর (জগদল) গ্রামের রবিউল হাসান (২৫) ও কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাসুম (২৫)। এদের মধ্যে চারজন ওই কলেজের শিক্ষার্থী। এছাড়া আরও তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

এরা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক রণজিৎ সরকার বলয়ের অনুসারী; সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য নাজমুল ইসলাম সমর্থিত ছাত্রলীগ কর্মী।

ঘটনার পরপরই অভিযুক্তদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযানে নামে পুলিশ। শুক্রবার রাত ২টার দিকে পুলিশ অভিযুক্ত সাইফুরের কক্ষ থেকে একটি পাইপগান, চারটি লম্বা দা, একটি ছুরি ও দুটি লোহার জিআই পাইপ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শাহপরান থানা পুলিশ বাদী হয়ে সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে অস্ত্র আইনেও একটি মামলা করেছে।