হু-হু করে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম

পারভেজ দেওয়ান পারভেজ দেওয়ান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১:৩৮ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২১, ২০২০

এ যেনো মরার উপর খাঁড়ার ঘাঁ। একদিকে পুরো বিশ্বে যখন করোনায় স্তব্ধ, ঠিক তখন-ই বাংলাদেশের বাজার পরিস্থিতি উদ্বেগজন।

রমজানকে কেন্দ্র করে হু-হু করে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। এতে বিপাকে পরেছে করোনায় কর্মহারা সাধারণ মানুষ। সরবরাহ ও আমদানি স্বাভাবিক থাকার পরও প্রতিবছরের মতো এবারও রমজানকে ঘিরে ব্যবসায়ীরা অতি মুনাফার লোভে কারসাজি শুরু করেছে। সরবরাহ সংকটের অযুহাত দেখিয়ে রমজানকে সামনে রেখে দুই মাসে ধরে ধাপে ধাপে বাড়ানো হয়েছে একাধিক পণ্যের দাম। চাল থেকে শুরু করে ডাল, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, মরিচ, আদা-রসুন, চিনি এমনকি রমজানে অতি ব্যবহৃত পণ্য ছোলা ও খেজুরের দাম বাড়ানো হয়েছে। এতে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এসব পণ্য কিনতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

গত এক সপ্তাহে প্রতিকেজি মাঝারি আকারের মশুর ডালের দাম বেড়ে ৮০ থেকে ৯০ হয়েছে। সাত দিনে কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০-২৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি আদার দাম বেড়েছে ১০০-১২০ টাকা। মাসের ব্যবধানে কেজিতে ছোলার দাম বেড়েছে কেজিতে ৫-৮ টাকা। প্রতিকেজি চিনিতে দাম ৫ টাকা। এছাড়া গত মাসের তুলনায় এ মাসে খেজুরের দামে লক্ষনীয় পার্থক্য দেখা গেছে। রাজধানীসহ সারা দেশে টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি অব্যহত রাখা হয়েছে। এর পরও এসব কার্যক্রমকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে অসাধুরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে চলছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নয়াবাজার, রামপুরা বাজার, কেরানীগঞ্জেরে সর্ব বৃহৎ জিনজিরা বাজার, গাজীপুরে টংগী বাজার, উত্তরার বিভিন্ন বাজার সহ একাধিক বাজার ঘুরে এ সব পণ্যের কোনো ধরনের সংকট দেখা যায়নি। বরং চাহিদার তুলনায় প্রতিটি দোকানে বেশি মজুদ লক্ষ করা গেছে।

রাজধানীর উত্তরার সরকার মার্কেট এ নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. মোক্তার বলেন, রমজান এ প্রয়োজন এমন কিছু পন্য ক্রয় করার জন্য বাজারে আসছিলাম কিন্তু গত সপ্তাহের তুলনায় সব পন্যের দাম তুলনামূলক অনেক বেশি । কারণ আর মাত্র কয়েকদিন পর রমজান। অরেক ক্রেতা আব্দুর রহিম বলেন,প্রতি বছরের মতো এবারও বিক্রেতারা কারসাজি করছে।

দেশের এই করোনা পরিস্থিতিতেও তারা অতি মুনাফা করতে ভোক্তার পকেট কাটছে। একই বাজারের মুদি ব্যবসায়ী মো. রিয়াজ বলেন, পাইকাররা সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। যার কারণে বেশি দাম দিয়ে এনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে বাজারে যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে তার কোনো সংকট নেই। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পণ্য আছে। করোনা মহামারীর এ সময়ে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। বিশেষ করে নিন্ম ও মধ্যবিত্তের চাল বলে খ্যাত মোটা ও সিদ্ধ চালের বস্তা প্রতি ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মিল মালিক ও চাল ব্যবসায়ীদের দাবি, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকার কারণে দাম বাড়ছে। এছাড়া রমজানের অত্যাবশ্যকীয় চারটি ভোগ্যপণ্য- ছোলা, ডাল, চিনি ও ভোজ্যতেলের দামও হু হু করে বেড়ে গেছে।

মজুদ করে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার কারণে এমনটি হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেন। তারা বলছেন, এখনই সরকারের উচিত বাজার তদারকির ব্যবস্থা করা।