স্ট্রাটেজি ছাড়া ব্যাবসা পরিচালনা করা কঠিন – মাহাবুবুর রহমান পল্লব

প্রকাশিত: ৪:৩৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৪, ২০২২

মাহাবুবুর রহমান পল্লব (Mahabobur Rahaman Pollob) একজন ‘ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট ও কনসালটেন্ট’, – অনলাইন ভিত্তিক ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি “সফটি ডিজিটাল” এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও। সফটি ডিজিটাল (Softy Digital) ১৪টি দেশের মোট ১২০০ টির অধিক প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল মার্কেটিং এ সহায়তা দিয়ে আসছে। এই এজেন্সি মূলত বিভিন্ন কোম্পানির বিজনেস ডেভেলপমেন্টের সেক্টরগুলো নিয়ে কাজ করে থাকে।

বর্তমানে সারাবিশ্বে প্রযুক্তির উন্নয়ন হওয়ার সাথে সাথে ইন্টারনেট জগৎটাও পৌঁছে গেছে অনেক শীর্ষে। কেনাকাটা, বিভিন্ন সেবা থেকে শুরু করে অনলাইনে ব্যবসা করা যাচ্ছে বিভিন্ন সেক্টরে। বর্তমানে অনলাইনে ব্যবসা করে অনেকেই স্বাবলম্বী হচ্ছেন খুব অল্প সময়েই, আবার অনেকেই অনলাইন ব্যবসা থেকে ছিটকে পড়ে যাচ্ছেন।

অনলাইন ব্যবসা ও অফলাইন ব্যবসার মধ্যে প্রধান পার্থক্য হচ্ছে – অনলাইন ব্যবসা হল, যে সকল ব্যবসা শুধুমাত্র ঘরে বসে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট এর মাধ্যমে পরিচালনা করা সম্ভব সেগুলো। পক্ষান্তরেঃ কোন নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট ব্যবসা করাই হলো অফলাইন ব্যবসা। অনলাইন ব্যবসা আপনি বিশ্বের যেকোন জায়গা থেকে ঘরে বসে পরিচালনা করতে পারবেন তার জন্য আপনার নির্দিষ্ট কোন জায়গা অথবা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন নেই। অনলাইন ব্যবসা পরিচালনা করতে শুধুমাত্র আপনার একটি কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ অথবা ভালো মানের একটি স্মার্টফোন ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে যে কোন জায়গা থেকেই পরিচালনা করতে পারবেন। পক্ষান্তরে যদি অফলাইন ব্যবসা করেন সেক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই একটি প্রতিষ্ঠান তথা অফিস প্রয়োজন হবে। তার সাথে প্রয়োজন হবে এসেট্স এবং অন্যান্য যাবতীয় সামগ্রী। এমনকি একটি স্টোর এর ও প্রয়োজন হতে পারে।

অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে বড় ভুল হচ্ছে সঠিক নিস যাচাই করা এবং সেই অনুযায়ী মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি প্ল্যান করে মার্কেটিং করা। সঠিক মার্কেটিং স্ট্রাটেজি ও প্লান নিয়ে কাজ করছে সফটি ডিজিটাল। বর্তমান সময়ের ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ব্যাবসার প্রসারের দিকে ঝুকচ্ছে বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো, পিছিয়ে নেই নতুন উদ্যোক্তারাও। ২০১৫-২০১৬ সালের দিকে একজন উদ্যোক্তার জন্য ওয়েবসাইট, পেইড এড রান, মোটকথা অনলাইনে প্রচার-প্রচারণা করা ঝামেলা মনে হতো। কিন্তু বর্তমানে যে কেউ চাইলেই ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে তার নিজের ব্যবসা শুরু করতে পারে, তবে যে প্রোডাক্টগুলোর চাহিদা বেশি সঠিক ভাবে নিস বিবেচনা করে সেই বিজনেস শুরু করা লাভজনক হবে। মার্কেটিং করার কৌশল জানা থাকলে, আপনি খুব সহজে কাস্টমারের নিকট পৌছাতে পারবেন। মার্কেটিং আপনার ব্যবসায়ের ব্রান্ড ভ্যালু যেমন বৃদ্ধি করবে, সেই সাথে বৃদ্ধি করবে আপনার বিক্রি। ব্যবসায় সফল হতে গেলে আমাদের নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করতে হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে জরুরি যে জিনিস সেটা হলাে মার্কেটিং।

মার্কেটিং নিয়ে তাে অনেকেই পড়া লেখা করে কিন্তু, মার্কেটিং এ সফল হওয়ার উপায় কত জন জানে। মার্কেটিং এ সফল হওয়ার উপায় জানা থাকলে যেকোন ব্যবসায় সফলতা লাভ করা সম্ভব। আজকাল অনেকেই চাকরি থেকে ব্যবসা করার প্রতি বেশি আগ্রহী। নিজের একটি সুন্দর গুছানাে ও পরিপাটি ব্যবসা থাকবে আর সেই ব্যবসার সুনাম দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়বে সেই স্বপ্ন সবাই দেখে। একটি ব্যবসা শুরু করার পর থেকে তা চালিয়ে নেয়া বেশ কষ্টকর হয়ে থাকে। কোন একটি পণ্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করার পর সেটার প্রচার নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়। নিজের ব্যবসার পণ্যটি অন্যের কাছে যত সুন্দর ভাবে প্রচার করা যাবে, ব্যবসার জন্য সেটা তত ভালাে হবে। পণ্যের এই প্রচারণাকে বলা হয় মার্কেটিং। মার্কেটিং হলাে ব্যবসার ধরন বা বিবরণ প্রচার করা। নিজের পণ্যকে সবার সামনে তুলে ধরা।

একটা ব্যবসা লাভজনক করতে হলে মার্কেটিং প্ল্যান ঠিক থাকতে হবে। এই সম্পর্কে মাহাবুব বলেন, ধরুন আপনি একটি শার্ট কিনবেন, এখন “সানজিদ” একজন বিক্রয়কর্মী এসে আপনাকে তাদের ব্র্যান্ডের শার্ট দেখিয়ে বলল্লো – তাদের ব্র্যান্ডের শার্ট সবচেয়ে ভাল, দাম ১৫০০ টাকা।

এমন সময় “আশরাফ” আরেক বিক্রয়কর্মী আপনাকে তাদের ব্র্যান্ডের শার্ট কেন ভালো, কি ম্যটেরিয়াল দিয়ে তৈরি, কীভাবে ব্যবহার করলে শার্ট সহজে ছিড়ে বা নস্ট হয়ে যাবে না এসব সম্পর্কে ব্যখ্যা করলো এবং পরিশেষে বললো দাম ১৫০০ টাকা।

এখানে কোন বিক্রয় কর্মীর শার্ট বিক্রয় হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে হচ্ছে? উত্তরঃ “আশরাফ” বিক্রয়কর্মীর। ঠিক তখনই একজন ক্রেতা আপনার প্রোডাক্ট কিনতে আগ্রহী হবে যখন আপনি আপনার প্রোডাক্টের উপর তার আস্থা সৃষ্টি করতে পারবেন। এখানে “আশরাফ” বিক্রয়কর্মী যেভাবে প্রোডাক্টটির ডিটেইল আলোচনা করেছে এটাকে মূলত বলে সেলস ফানেল। যখন আপনি আপনার প্রোডাক্টের উপর একজন ক্রেতার আস্থা সৃষ্টি করতে পারবেন, তখনি আপনার সেই প্রোডাক্টটা বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। আপনি এই ব্যাপারটা নিজের সাথে মিলিয়ে দেখতে পারেন, ঠিক তখনই আপনি একটা পণ্য বা প্রোডাক্ট কিনেন যখন আপনি সেই প্রোডাক্ট এর উপর আস্থা পান।

মাহাবুব বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান শুধু ফেসবুক বুস্টিং ই মার্কেটিং বলে চালিয়ে দিচ্ছে। যখন আপনি কোন প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা গ্রহণ করবেন, তখন সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে তাদের আগের করা কাজের পোর্টফোলিও দেখে তারপর আপনার প্রতিষ্ঠানটি তাদের হাতে দিতে পারেন আপনার বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এর জন্য। “সফটি ডিজিটাল” মূলত সম্পূর্ণ বিজনেস স্ট্যাটেজি প্লেন নিয়েই একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে এগ্রিমেন্ট করে এবং সেই প্রতিষ্ঠানের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট হিসেবে কাজ করে।