ঢালাওভাবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ

প্রকাশিত: ৬:২৩ অপরাহ্ণ, জুন ১১, ২০২০

করোনাভাইরাসজনিত সৃষ্ট সংকটের কারণে পরিবর্তিত অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে অর্থনীতিকে মূলধারায় ফিরিয়ে আনা এবং মানুষকে নতুনভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠার সুযোগ সৃষ্টিরর জন্য নতুন অর্থবছরের (২০২০-২১) বাজেটে অপ্রদর্শিত টাকা বৈধ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ জুন) জাতীয় সংসদে ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা’ শিরোনামে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি ক্ষমতাসীন সরকারের চলতি মেয়াদের দ্বিতীয় এবং দেশের ৪৯তম বাজেট।

প্রস্তাবিত বাজেট তুলে ধরার সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কেবল রাজস্ব আহরণই নয়; বরং করোনাভাইরাসজনিত চলমান সংকটের কারণে পরিবর্তিত অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে অর্থনীতিকে মূলধারায় ফিরিয়ে আনা এবং মানুষকে নতুনভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠার সুযোগ সৃষ্টি করা সময়ের দাবি।’

‘বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দারও পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। এ অবস্থায় আগামী অর্থবছর আমাদের অত্যন্ত বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার সঙ্গে রাজস্বনীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘অর্থনীতিতে কার্যকর চাহিদা সৃষ্টি এবং তা বজায় রাখার নিমিত্তে পর্যাপ্ত সরকারি ব্যয় নির্বাহের জন্য একদিকে আমাদের অধিক পরিমাণে রাজস্ব জোগান দিতে হবে, অন্যদিকে বেসরকারি খাতেও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখতে হবে।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো কোনো ক্ষেত্রে করদাতার রিটার্ন দাখিলে অজ্ঞতার কারণে তাদের কিছু অর্জিত সম্পদ প্রদর্শনে ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে। এ অবস্থায় করদাতাদের আয়কর রিটার্নের এই ত্রুটি সংশোধনের সুযোগ প্রদান এবং অর্থনীতির মূল স্রোতে অর্থপ্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমি আয়কর অধ্যাদেশে আয়কর প্রণোদনা সংক্রান্ত দুটি ধারা সংযোজনের প্রস্তাব করছি।’

 

‘প্রথমত, দেশের প্রচলিত আইনে যা-ই থাকুক না কেন, আগামী ১ জুলাই, ২০২০ থেকে ৩০ জুন, ২০২১ এর মধ্যে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাগণ আয়কর রিটার্নে অপ্রদর্শিত জমি, বিল্ডিং, ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্টের প্রতি বর্গমিটারের ওপর নির্দিষ্ট হারে এবং নগদ অর্থ, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার, বন্ড বা অন্য কোনো সিকিউরিটিজের ওপর ১০ শতাংশ কর প্রদান করে আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করলে আয়কর কর্তৃপক্ষসহ অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না।’

‘দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অন্যতম চালিকাশক্তি পুঁজিবাজারকে গতিশীল করার লক্ষ্যে তিন বছর লক-ইনসহ কতিপয় শর্তসাপেক্ষে আগামী ১ জুলাই, ২০২০ থেকে ৩০ জুন, ২০০১ এর মধ্যে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা পুঁজিবাজারে অর্থ বিনিয়োগ করলে এবং উক্ত বিনিয়োগের ওপর ১০ শতাংশ কর প্রদান করলে আয়কর কর্তৃপক্ষসহ অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না।’

প্রস্তাবিত বিধানসমূহ কার্যকর হলে অর্থনীতির মূল স্রোতে অর্থপ্রবাহ বাড়বে, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে এবং আয়কর রাজস্ব আহরণ বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী।