একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমি স্তম্ভিত: বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম

প্রকাশিত: ৪:১৫ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯

টাকা, কোটি থেকে শত কোটি, হাজার কোটির হিসাব। জুয়া-ক্যাসিনো। র‌্যাবের অভিযানে ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার। ক্যাসিনো পরিচালনাকারী নেপালিদের পালানোর সুযোগ করে দেওয়ার সিসিটিভি ফুটেজ, অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। থানার দেয়ালের ওপাশে ক্যাসিনো, পুলিশের দাবি ‘কিছুই জানতাম না’।

বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম টাইমস বিডি অনলাইনকে বলেন, “আমরা পত্রিকার মাধ্যমে যে খবর পাচ্ছি তাতে দেখা যাচ্ছে সরকার দলীয় প্রভাবশালী নেতা, যুবলীগ-ছাত্রলীগের প্রভাবশালী নেতা- যারা সরকার পরিচালনার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এবং এর সঙ্গে প্রশাসনের মধ্যে যাদের দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা- সেই পুলিশ বাহিনীও জড়িত। পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধেও বক্তব্য আসছে যে তাদেরকেও রীতিমতো মাসোহারা দেওয়া হতো ক্যাসিনো চালানোর জন্যে।”

“ক্যাসিনো চালানো বাংলাদেশের আইনে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু, দেখা যাচ্ছে যে দেশে এটি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দৃষ্টিতে এটি ধরা পড়া উচিত ছিলো। তারা এখন বলেন যে ‘আমরা এ ব্যাপারে কিছু জানতাম না’। আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে মনে করি, এ বক্তব্য গ্রহণযোগ্য না।”

“এক বছর আগে গণমাধ্যমে ক্যাসিনো নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিলো। তারপরও সরকার বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো অভিযান চালানো হয়নি? পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রেক্ষিতে দেখা যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সম্মতিতে বা তাদের জানা মতে এই অপকর্মগুলো চালানো হয়েছে।”

“আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে স্তম্ভিত হচ্ছি- এই যদি দেশের অবস্থা হয় তাহলে কোথায় আইনের শাসন? কোথায় নাগরিকদের অধিকার রক্ষার প্রচেষ্টা?”

বিদেশিদের অবৈধভাবে ক্যাসিনোগুলোতে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হলো আবার অভিযান চলার সময় তাদেরকে পালানোর সুযোগও দেওয়া হলো। পুলিশ কেনো নেপালিদের পালানোর সুযোগ দিলো?- “পুলিশ কেনো পালানোর সুযোগ দিলো তা পুলিশ বলতে পারবে। আমরা সাধারণ নাগরিক হিসেবে যা দেখি- পুলিশের সঙ্গে এইসব অপকর্মকারীদের একটা যোগসাজশ ছিলো। এর ফলশ্রুতিতে তারা চলে গেলো।… দেশে যে আইনশৃঙ্খলা নেই তা এখন চোখ বন্ধ করে বলে দেওয়া যায়।”

“কয়েকজন সাংবাদিক এর সঙ্গে জড়িত, রাজনীতিবিদরা জড়িত। পুলিশ জড়িত। কে জড়িত না- সেটাই এখন খুঁজে বের করতে হবে। জড়িতদের চিহ্নিত করতে হবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এসবের সঙ্গে জড়িত তাদেরকে ধরতে সরকার যদি ব্যর্থ হয় তাহলে সরকারের ভাবমূর্তি একেবারে তলানিতে চলে যাবে।”