ইসি-ঐক্যফ্রন্ট বৈঠকে উত্তাপ: ক্ষুব্ধ হয়ে বেরিয়ে আসেন ড. কামাল-ফখরুল

প্রকাশিত: ৪:৪৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৮

ডেস্ক রিপোর্ট: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে তুমুল উত্তাপ ছড়িয়েছে। আলোচনার একপর্যায়ে সভাশেষ না করেই সংক্ষুব্ধ হয়ে বেরিয়ে আসেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনসহ অন্যরা।

মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সিইসির বিরুদ্ধে ‘অশোভন’ আচরণের অভিযোগ তোলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সিইসি জাতীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। তিনি বলেন, সরকার ও ইসি মিলে নির্বাচন বানচাল করতে চাইছে। এখন সিদ্ধান্ত জনগণের হাতে।

জাতীয় ঐক্যফ্রণ্টের শীর্ষ নেতারা সিইসি কেএম নুরুল হুদার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও তোলেন। ফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সিইসির আচরণ ভদ্রজনিত ছিল না। এ জন্য আমরা সভা বয়কট করেছি। তবে আমরা নির্বাচনে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেব না।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন যৌথভাবে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে এবং নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। ইসি সরকারের পক্ষ হয়ে গেছে। সিইসির আচরণ ভদ্রজনিত ছিল না। এ জন্য আমরা সভা বয়কট করেছি। তবে আমরা নির্বাচনে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেব না।

পুলিশের বিরুদ্ধে ঐক্যফ্রন্টের অভিযোগ সিইসি গ্রহণ করেননি জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, সিইসি কোনো ভদ্রতাসূচিত আচরণ করেননি। আমরা পুলিশের দ্বারা নির্যাতিত হওয়ার কথা জানালে তিনি কোনো সহানুভূতি না জানিয়েছে হঠাৎ করেই পুলিশের পক্ষেই অবস্থান নেন। তাই আমরা বৈঠক থেকে চলে এসেছি।

সংবাদ সম্মেলনের পর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সভার বর্ণনা দিয়ে বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন তার বক্তব্যে সিইসির উদ্দেশ্যে বলেন, সিইসি বর্তমানে প্রধান বিচারপতির চেয়েও শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারেন। আপনি ইচ্ছা করলে জানোয়ার-লাঠিয়াল পুলিশ বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। আপনার এই লাঠিয়াল পুলিশ বাহিনী আমাদের মিটিং-মিছিল কিছুই করতে দিচ্ছে না। এমনকি বেলা ২টার পর মাইক ব্যবহারের জন্য আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ তার জোটেরা নিয়মকানুন না মেনে পুলিশের সহায়তায় প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।

ড. কামাল হোসেন আরও বলেন, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের গুণ্ডা বাহিনী আমাদের ওপর হামলা করছে। আমাদের প্রার্থীদের জীবনের দাম না থাকলেও কর্মীদের জীবনের দাম রয়েছে। তাদের তো রক্ষা করতে হবে।

এ সময় সিইসি ক্ষুব্ধ হয়ে ড. কামাল হোসেনকে বলেন, আপনি এমন কী হয়েছেন যে, পুলিশকে লাঠিয়াল-জানোয়ার বলছেন? নিজেকে কী মনে করেন? তখন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান সিইসিকে বলেন, নির্বাচনের কোনো পরিবেশ যদি সৃষ্টি করতে না পারেন, তা হলে বলে দেন-আমরা আজকেই প্রেসক্লাবে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বর্জনের বিষয়ে ঘোষণা দিই।

সিইসির পক্ষ থেকে ইতিবাচক কোনো সাড়া না পেয়ে দুপুর ২টা দিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা সংক্ষুব্ধ হযে সভাস্থল ত্যাগ করেন।

বৈঠকে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দার।

বৈঠকে সিইসি কে এম নূরুল হুদা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেসুর রহমানসহ ইসি সচিবালয়ের আরো অনেকে।

দুপুর ১২টায় নির্বাচনের পরিস্থিতি নিয়ে সিইসির সঙ্গে বৈঠকে বসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনসহ ১০ নেতা।