ইবির আইন বিভাগ অবরোধ, সনদের বৈধতা চান সান্ধ্যকালীন শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ৩:৪৪ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৯
ইবির আইন বিভাগ অবরোধ শিক্ষার্থীদের। ছবি: সংগৃহীত

সনদের বৈধতার দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন বিভাগ অবরোধ করেছেন সান্ধ্যকালীন কোর্সের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ২ বছরমেয়াদি সান্ধ্যকালীন সনদে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মতো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষায় আবেদন করতে পারছেন না। এ অভিযোগে শিক্ষার্থীরা পূর্বনির্ধারিত এলএলবি এবং এলএলএম ব্যাচের পরীক্ষা বয়কট করে বিভাগ অবরোধ করেন তারা।

পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় বিকালে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

অবরোধকারী ও বিভাগীয় সূত্র জানায়, পূর্বনির্ধারিত শিডিউল অনুযায়ী সকাল ১০টায় এলএলবি এবং দুপুর সোয়া ২টায় এলএলএম শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

তবে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। এ সময় তারা বিভাগের সামনে প্রায় ৩ ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান নেন। বিভাগীয় সভাপতির কক্ষের সামনে অবস্থানকালে তারা বিভাগের কলাপসিবল গেটে তালা ঝুলিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ২ বছরমেয়াদি প্রাপ্ত ডিগ্রি দিয়ে অ্যাডভোকেটশিপ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেন না তারা। কারণ হিসেবে তারা জানান, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে তাদের সনদের (এলএলবি) অনুমোদন না থাকায় পরীক্ষার আবেদন করতে পারছেন না তারা। এক্ষেত্রে বার কাউন্সিল কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি সান্ধ্যকালীন কোর্সের নিবন্ধন জটিলতার কারণে মূলত এমনটি হচ্ছে বলে দাবি করেন আন্দোলনকারীরা।

এ ছাড়া দুই বছরমেয়াদি সান্ধ্যকালীন (এলএলবি) কোর্স শেষ করে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে পরীক্ষার আবেদন করতে গেলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্যকালীন কোর্সের (এলএলবি) কোনো নিবন্ধন নেই বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষার্থীরা জানান, বার কাউন্সিল থেকে এটাও জানানো হয় যে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বেশ কয়েকবার চিঠি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অথবা আইন বিভাগের পক্ষ থেকে চিঠির কোনো জবাব দেয়া হয়নি। সান্ধ্যকালীন কোর্স চালুর দীর্ঘদিন পার হলেও বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় পরীক্ষা বর্জন করে বিভাগে তালা লাগিয়ে আন্দোলন করেন তারা।

এর আগে সকালে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল বিভাগীয় সভাপতি সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তবে বিষয়টি সুরাহা হয়নি। পরে দ্বিতীয় দফায় সভাপতিসহ বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বসার আশ্বাস দিলে অবরোধ প্রত্যাহার করে পরীক্ষা দিতে সম্মত হন শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, গত বছরের ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ বার কাউন্সিল থেকে পাঠানো এক চিঠিতে বিভাগের অধীন চালু থাকা ২ বছরমেয়াদি এলএলবি কোর্সবিষয়ক বিস্তারিত তথ্য দেয়ার নির্দেশ আসে। একই সঙ্গে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ বছরমেয়াদি কোর্সেও ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয় ওই চিঠিতে।

এ বিষয়ে আইন বিভাগের সাভাপতি প্রফেসর ড. জহুরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তাদের এটা করা ঠিক হয়নি। আমরা বারের নোটিশ পাওয়ার ১ সপ্তাহের মধ্যে সব ডকুমেন্ট পাঠিয়েছি। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, আশা করছি অতিদ্রুত সুষ্ঠু সমাধান হবে।’