১৮৬০ সালে ব্রিটিশদের করা ব্যভিচার আইন সংশোধনের দাবী

প্রকাশিত: ১:১৩ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৪, ২০১৯

২৩ মার্চ সকাল ১০:৩০ মিনিটে শহীদ মুনীর-আজাদ সেমিনার কক্ষ, মনি সিংহ-ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্ট ভবন, ২১/২, পুরানা পল্টন, ৬ষ্ঠ তলা, ঢাকায় দি রানার নিউজের উদ্যোগে ১৮৬০ সালে ব্রিটিশদের করা ব্যভিচার আইন, দন্ডবিধির ৪৯৭ ধারা ও বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন রানার নিউজের সহযোগী সম্পাদক ড. আব্দুর রাজ্জাক খাঁন ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বলেন, আলোচ্য বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর। আইনটি অধিকতর আলোচনার জন্য সংসদে উপস্থাপনের দাবী জানাচ্ছি। পাশাপাশি আইন কমিশন ও মানবাধিকার কমিশনে বিষয়টি উপস্থাপনের দাবী জানাচ্ছি।

রীটকারী আইনজীবী অ্যাড. ইশরাত হাসান বলেন, ৪৯৭ ধারা একজন নারীর জন্যও অবমাননাকর। ১৮৬০ সালে ব্রিটিশদের করা ব্যভিচারের আইন, বিধির ৪৯৭ ধারা বর্তমান প্রেক্ষাপটে কতটুকু যৌক্তিক! সাধারণত ব্যভিচার বলতে আমরা যা বুঝি, যে কোন ব্যাক্তি অপর কোন ব্যাক্তির বিবাহিতা স্ত্রীকে জেনে শুনে ঐ ব্যাক্তির স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করে যা নারী ধর্ষণের শামিল নয়, সে ব্যাক্তি ব্যাভিচারের অপরাধে দোষী হবে। দন্ডবিধির ৪৯৭ ধারায় ব্যভিচার সম্পর্কে বলা হয়েছে- Sec.-497 Adultery: Whoever has sexual intercourse with a person who is and whom he knows or has reason to believe to be the wife of another man, without the consent or connivance of that man, such sexual intercourse not amounting to the offence of rape, is guilty of the offence of adultery, and shall be punished with imprisonment of either description for a term which may extend to five years, or with fine, or with both. In such case the wife shall not be punishable as an abettor.

অর্থাৎ যে কোন ব্যাক্তি অন্য ব্যাক্তির স্ত্রী অথবা যাকে সে অপর কোন লোকের স্ত্রী বলে জানে বা তার অনুরুপ বিশ্বাস করার কারন রয়েছে এমন কোন ব্যক্তির সঙ্গে উক্ত অপর লোকের সম্মতি বা সমর্থন ব্যাতিরেকে এরুপ যৌন সম্পর্ক করে যা নারী ধর্ষণ এর সামিল নহে, সে ব্যাক্তি ব্যভিচার এর অপরাধে দোষী এবং যে কোন বিবরণে কারাদন্ডে যার মেয়াদ পাঁচ বৎসর পর্যন্ত হতে পারে বা জরিমানা বা উভয় দন্ডেন্ডিত হবে। অনুরুপ ক্ষেত্রে স্ত্রী লোকটি দুষ্কর্মে সহায়তাকারিণী হিসেবে দন্ডিত হবে না। সাধারণত ব্যাভিচার সংক্রান্ত অপরাধের ক্ষেত্রে উভয় পক্ষেরই সম্মতি থাকে।অথচ স্ত্রী লোকটি দুষ্কর্মের সহায়তাকারিণী হিসেবে দন্ডিত হবে না এ কেমন কথা? কেউ কি একবার ভেবে দেখেছেন- যে নারীটি নিজের স্বামীকে ঠকিয়ে এমন কি ছোট অবুঝ সন্তানদেরকে ফেলে রেখে সজ্ঞানে নিজ ইচ্ছায় অন্য পুরুষের সঙ্গে ব্যাভিচারে লিপ্ত হয় সে তো আর শিশু নয় যে, একখানা চকলেট ধরিয়া ফুসলিয়ে আদর করে কোলে নিয়ে চলে গেলাম। তাহলে কেন পুরুষের শাস্তি হবে? মহিলাটির শাস্তি নয় কেন? ব্যভিচারের ৪৯৭ ধারায় নারীর শাস্তির ব্যবস্থা না রাখার কারণে নারীকে পরকীয়ায় বৈধতা দেয়া হয়েছে।

যার ফলে প্রতিনিয়ত পরকীয়াজনিত হত্যাকান্ডের স্বীকার হচ্ছে স্বামী ও সন্তানেরা । সাম্প্রতিক সময়ে স্ত্রীর দ্বারা পারিবারিক কলহে স্বামী ও শিশু হত্যার সংখ্যা উদ্বেগজনকহারে বেড়েছে। তাই আমরা ৪৯৭ ধারার সংশোধন চাই। এছাড়াও ২০০০ সালের পারিবারিক সহিংসতা আইনে পুরুষের নাম না রাখায় পারিবারিক সহিংসতায় হত্যাকান্ডের স্বীকার পুরুষরা যথাযথ বিচার পাচ্ছে না। এ আইন পুরুষের জন্য বৈষম্যপূর্ণ। সাম্প্রতিক সময় পারিবারিক কলহের কারণে যে কয়টা হত্যাকান্ড হয়েছে তার বেশির ভাগই পরকীয়ার কারণে ঘটেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে পরুষ ও পরিবারের শিশুরা এর ভুক্তভোগী হচ্ছে।

অন্যান্য বক্তারা নারী পুরুষ সকলের জন্য সমঅধিকার ও সমশাস্তির বিধান দাবী করেন।