দুপুরেই ঢাকা ছাড়েন মুরাদ

প্রকাশিত: ১১:৪৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৬, ২০২১

বিতর্কিত মন্তব্য আর কল রেকর্ড ফাঁসের পর চারদিকে যখন সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছিল ঠিক তখনই ঢাকা ছাড়েন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান। সোমবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা টাইমস বিডিকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ডা. মুরাদ চট্টগ্রামের উদ্দেশে দুপুরেই ঢাকা থেকে রওনা হন। সেখানে তার এক বন্ধুর বাসায় ওঠার কথা। বর্তমানে তার ফোন বন্ধ রয়েছে। তাই তার সঠিক অবস্থান জানা যায়নি।

ADVERTISEMENT

এদিকে, সোমবার সচিবালয়ে নিজ দফতরেও আসেননি প্রতিমন্ত্রী। এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর তোপখানা রোডে অবস্থিত বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদের এক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু সেখানেও যাননি তিনি।

টাইমস বিডির পক্ষ থেকে দিনভর একাধিকবার ফোন করা হলেও ধরেননি ডা. মুরাদ। সর্বশেষ রাত ১০টায়ও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে, প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার রাতে তাকে পদত্যাগের এ নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রীকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছেও বলে জানান তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, মঙ্গলবারের মধ্যে মুরাদ হাসানকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে।

ADVERTISEMENT

সম্প্রতি একটি ভার্চুয়াল টকশোতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন ডা. মুরাদ। এরপর তার সমালোচনা করেন অনেকে। এছাড়া তার পদত্যাগেরও দাবি ওঠে।

এছাড়া ডা. মুরাদ হাসান ও ঢালিউডের এক চিত্রনায়িকার মধ্যকার কথোপকথনের কল রেকর্ড ফাঁস হয়। যা ইতোমধ্যে টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। অডিও ক্লিপটিতে শোনা যায়, ওই নায়িকাকে তাৎক্ষণিক তার কাছে যেতে বলছেন মুরাদ। নায়িকা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হুমকি দেন প্রতিমন্ত্রী।

মূলত ওই কল করা হয়েছিল চিত্রনায়ক ইমনের ফোনে। ওই মুহূর্তে একটি সিনেমার বিষয়ে মিটিং করছিলেন ইমন ও সেই নায়িকা। সঙ্গে ছিলেন পরিচালক ওয়াজেদ আলী সুমনও। ফোনকল রেকর্ড নিয়ে যখন তোলপাড়, তখন স্বাভাবিকভাবেই ইমনের নামটিও উঠে আসে আলোচনায়। তবে ওই পরিস্থিতিতে মন্ত্রীকে কেবল সামাল দিতে চেয়েছিলেন বলে টাইমস বিডিকে জানান ইমন।

ইমন বলেন, কল রেকর্ডে তো পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, আমি হয়ত শুটিংয়ে ছিলাম, ব্যস্ততার জন্য তার (প্রতিমন্ত্রী মুরাদ) ফোন ধরতে পারিনি। এ কারণে তিনি সে রাতে ফোন দিয়ে রাগারাগি করেন। ওই সময় আমি আর ও (নায়িকা) ‘ব্লাড’ সিনেমা নিয়ে একটা মিটিং করছিলাম পরিচালক সুমন ভাইয়ের সঙ্গে। তখন তিনি (প্রতিমন্ত্রী) আমাদের যেতে বলেন। এখন পরিস্থিতি সামাল তো দিতে হবে। আমরা তো একটি মিটিংয়ে ছিলাম। এজন্য বারবার বলছিলাম, ‘ভাইয়া দুই মিনিট, নামতেছি’।

ইমন আরও বলেন, উনার মতো একজন মন্ত্রীর সঙ্গে তো আমি ভদ্রভাবে ছাড়া খারাপভাবে কথা বলতে পারি না। আমার এখানে কী দোষ? একজন মন্ত্রী যদি ফোন দেয়, আমি কী বলতে পারি? এত বড় একজন মানুষ, আমি থতমত খেয়ে গেছি।

ইমন জানান, ওই ঘটনা ২০২০ সালের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহের। ওই রাতে মিটিং শেষ করে ইমন ও নায়িকা নিজ নিজ বাসায় চলে যান। এর কিছুদিন পরই শুরু হয় করোনার প্রকোপ। লকডাউনের কারণে সবার মতো ঘরবন্দি হয়ে যান তারাও।