ত্রিপুরা থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে নতুন চুক্তি করবে না সরকার

প্রকাশিত: ১১:৫৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০১৯
বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির ১৭তম সভা। ছবি: ফোকাস বাংলা

ভারতের ত্রিপুরা থেকে বর্তমানে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ আমদানি হচ্ছে তার চেয়ে বেশি আমদানি করবে না সরকার। অর্থাৎ রাজ্যটি থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে নতুন করে চুক্তি হবে না। এর কারণ- ভারত থেকে বিদ্যুৎ আনতে যে সাবস্টেশন নির্মাণ করতে হবে তার ব্যয়বহুল। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এই ব্যয়ের কোনও যৌক্তিকতা নেই বলে মনে করছে বাংলাদেশ সরকার।

 

সোমবার রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির ১৭তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিগত কয়েকটি সভায় ত্রিপুরা থেকে আরও বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি আলোচিত হয়। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমদানির পরিমাণ বৃদ্ধির চিন্তা বাদ দেয়া হয়েছে বলে সভা সূত্র জানায়।

সভায় উপস্থিত একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ভারত থেকে বিদ্যুৎ আনতে ব্যাক টু ব্যাক হাই ভোল্টেজ সাবস্টেশন (এইচএসভিডিসি) নির্মাণে ৩০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হবে। বাংলাদেশ এখন চাহিদার অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। পায়রাসহ বড় প্রকল্পগুলো আগামী বছরের শুরু থেকেই উৎপাদন শুরু করতে পারবে। এ অবস্থায় ব্যয়বহুল সাবস্টেশন করা যৌক্তিক নয়। কুমিল্লা এলাকায় প্রয়োজনীয় গ্যাস আছে। প্রয়োজনে সেখানে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা যাবে। ত্রিপুরা থেকে এখন যে ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসছে এর বাইরে আর বিদ্যুৎ আনবে না বাংলাদেশ।

 

এছাড়া, ভারত দীর্ঘ দিন থেকে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে সঞ্চালন লাইন করে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় বিদ্যুৎ নিতে চায়। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত সমীক্ষা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এর আগের সভায় দিনাজপুরের পার্বতীপুর দিয়ে বাংলাদেশকে ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত করার চিন্ত করা হলেও এখন সৈয়দপুরের পূর্ব সাদিপুর দিয়ে যুক্ত করতে সমীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত কাটিহার-পার্বতীপুর-বরাকনগর ৭৬৫ কেভি লাইন করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকায় ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা যায় কিনা সে বিষয়ে একটি কারিগরি সমীক্ষা পরিচালনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশ থেকেও ভারতে বিদ্যুৎ রপ্তানি করা যায় কিনা তাও পর্যালোচনা করা হয়।

এদিকে সভাশেষে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, বিদ্যুৎ খাতে দুই দেশের সহযোগিতার বেশ কিছু ক্ষেত্র রয়েছে। আমরা কিছু জায়গা চিহ্নিত করেছি, যেগুলো নিয়ে কাজ করলে উভয় দেশ লাভবান হবে।

ভারতের বিদ্যুৎ সচিব সুভাষ চন্দ্র গার্গ বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে উৎপাদনে আসবে। তবে সুনির্দিষ্টভাবে কোনও বিষয়ে তিনি উত্তর দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।