অর্থমন্ত্রী কামালকে মুহিতের পরামর্শ

প্রকাশিত: ৭:২৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৪, ২০১৯
এনবিআর সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠানে আবুল মাল আবদুল মুহিত ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ছবি-সংগৃহীত 

করদাতার সংখ্যা বাড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভাগীয় শহরে জরিপ চালাতে নতুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে পরামর্শ দিয়েছেন সদ্য বিদায়ী অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বৃহস্পতিবার সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নতুনকে বেশকিছু পরামর্শ দেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। নতুন অর্থমন্ত্রীকে স্বাগত এবং সাবেক অর্থমন্ত্রীকে বিদায়ী শুভেচ্ছা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নতুন অর্থমন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়ে মুহিত বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় কর-জিডিপি অনুপাত কম। এটি বাড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের দিয়ে ঢাকাসহ অন্য জায়গায় জরিপ চালানো যায়। এ জরিপে শিক্ষার্থীরা মানুষজনের বাড়ি, গাড়ি, লাইফস্টাইলের তথ্য সংগ্রহ করবে এবং পরবর্তীতে তার কতো টাকা দেয়া উচিত সে বিষয়ে ধারণা দেবে। এর ভিত্তিতে এনবিআর ব্যবস্থা নেবে। মানুষজনের চরিত্রে পরিবর্তন আনতে এ ধরনের উদ্ভাবনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে। তাহলে সবার টনক নড়বে।

এর প্রেক্ষিতে সমাপনী বক্তৃতায় এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বাড়ি বাড়ি কর জরিপ চালানো সিদ্ধান্ত ছিল। নির্বাচনের কারণে সেটি বন্ধ ছিল। এখন সিটি কর্পোরেশনগুলোর সহায়তা নিয়ে জরিপ চালানো হবে। জেলা পর্যায়ে নতুন করদাতা খুঁজতে কর অঞ্চলগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আগামীতে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করে নতুন অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে মুহিত বলেন, আগামী অর্থবছরের বাজেটের প্রাথমিক কাজ করে রেখেছি। অন্যবার জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে বাজেটের কাজ শুরু হলেও এবার ডিসেম্বরে সেটি শুরু করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও এনবিআরের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে সাহায্য করতে পারবে।

কর বিভাগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার সময় কর বিভাগ ভয়ঙ্কর রকম জনবিচ্ছিন্ন ছিল। এখন চিত্র পাল্টেছে। এখন আর কেউ মনে করেন না, একবার করজালে ঢুকলে বারবার জবাই করা হবে। যারা এখন ৪০ বছরের কম বয়সীরা বেশি কর দিচ্ছেন। শুরুতে ৭ লাখ করদাতা পেয়েছিলাম। এখন ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এটি নতুন অর্থমন্ত্রীর আমলে ১ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। এর আগে নতুন অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দু’জনের মূখ্য রয়েছে। একজন প্রধানমন্ত্রী, দ্বিতীয়ত আবুল মাল আবদুল মুহিত।

তিনি আরও বলেন, এখন জি-২০ (বিশ্বের ধনী ২০টি দেশের সম্মেলন) চলছে। ২০৪১ সালে যাতে বাংলাদেশ জি-২০ সামিটে আমন্ত্রণ পায় সে জন্য সবার কাজ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছতে গেলে গাণিতিক হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করলে হবে না, জ্যামিতিক হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। এ জন্য কর বিভাগের সংস্কার ও বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার পরির্বতন করতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যে প্রত্যাশা করি বিদ্যমান শিক্ষা কাঠামো দিয়ে তা সম্ভব নয়। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা টেকনোলজি-বেইজডও নয়। এই শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে, বর্তমান ও আগামীর চাহিদা পূরণ অসম্ভব। এ জন্য শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন।