৬৮ বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত: ৮:০৩ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৬, ২০২০

১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই। রাজশাহীর বড় কুঠিতে মাত্র ১৬১ জন শিক্ষার্থী নিয়েই যাত্রা শুরু উত্তরাঞ্চলের প্রথম উচ্চ বিদ্যাপিঠের। কালের পরিক্রমায় ৬৮ বছরে পা দিল বিশ্ববিদ্যালয়টি।

শুরুতে দর্শন, ইতিহাস, বাংলা, ইংরেজি, অর্থনীতি, গণিত ও আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও, বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি অনুষদের অধীনে ৫৯টি বিভাগ।

উচ্চতর গবেষণার জন্য রয়েছে ৬টি ইনস্টিটিউট। বড় কুঠির সেই বিদ্যাপিঠটির আয়তন বেড়ে ৩০৩ দশমিক ৮০ হেক্টর। ১২৬০ জন শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজারে। অর্থাৎ সেই ১৬১ শিক্ষার্থীর বিদ্যাপিঠে পদচারণা ৩৮ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর।

এছাড়া বেড়েছে অবকাঠামো। ১২টি একাডেমিক ভবনসহ বর্তমানে রাবির ছাত্রদের থাকার জন্য আবাসিক হল রয়েছে মোট ১১টি ও ছাত্রীদের জন্য রয়েছে ৬টি।

১৯৫৩ সালের ৩১ মার্চ প্রাদেশিক পরিষদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। একই বছরের ৬ জুলাই ড. ইৎরাত হোসেন জুবেরীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

 

সেই সময় পদ্মাপাড়ের বড় কুঠি ও রাজশাহী কলেজের বিভিন্ন ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৬১ সালে বড় কুঠি থেকে নয়নাভিরাম মতিহারের এ সবুজ চত্বরে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম।

১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোহাম্মদ শামসুজ্জোহার প্রাণের বিনিময়ে স্বাধিকার সংগ্রামের ইতিহাসে যুক্ত হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালনরত ড. জোহা ছাত্রদের মিছিলকে সংযত রাখার চেষ্টা করেছিলেন।

তিনি চেষ্টা করছিলেন তার ছাত্ররা যাতে পশ্চিমা শাসক চক্রের লেলিয়ে দেয়া সশস্ত্র বাহিনীর আক্রমণের শিকার না হয়। কিন্তু তাদের বর্বর আক্রোশ মুহূর্তে বিদীর্ণ করে তার বুক। ড. জোহার মৃত্যুতে সারাদেশ বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল। প্রতিবাদে টলে উঠেছিল আইয়ুব খানের গদি, পতন হয়েছিল সেই স্বৈরশাসকের। তারই ফলে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির পথের একটি ধাপ পেরিয়ে এসেছিল মুক্তিকামী বাঙালি।

সুদীর্ঘ সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা নিয়ে অনেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অবদান রেখেছেন।

দীর্ঘ এ সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেছে ভাষা বিজ্ঞানী ও সাহিত্যিক ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক, সেলিনা হোসেন, ইতিহাসবিদ আব্দুল করিম, তাত্ত্বিক ও সমালোচক বদরুদ্দীন উমর, চলচ্চিত্র পরিচালক গিয়াসউদ্দিন সেলিম, নাট্যকার মলয় ভৌমিক, চলচ্চিত্র পরিচালক গিয়াসউদ্দিন সেলিমের মতো প্রতিভাধরদের।