স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, ধর্ষক ও সহযোগী গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: ১১:২২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০২০

কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্রের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষক জিসান ওরফে সোহেল (১৮) ও সহযোগী সাগরকে (২১) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আমতলী থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আজ বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে আটক দুজনকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের সেরাজপুর গ্রামের বাদশা গাজীর পুত্র জিসান ওরফে সোহেলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলার মাধ্যমে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় ধর্ষণের স্বীকার হওয়া ওই শিক্ষার্থীর। এক পর্যায়ে জিসান ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ প্রকাশ করে।

গত সোমবার সন্ধ্যার পূর্বে জিসান দেখা করতে আমতলী এসে ওই ছাত্রীর বাসার সামনে যায়। এরপর ছাত্রীর মোবাইল ফোনে কল করলে সে বাসা থেকে বের হয়ে জিসানের সঙ্গে দেখা করে। এক পর্যায়ে জিসান তাঁকে নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর কথা বলে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় তুলে আমতলী সদর ইউনিয়নের খুড়িয়ার খেয়াঘাটের দিকে নিয়ে যায়।

সেখানে আগে থেকেই প্রস্তুত রাখা একটি ভাড়াটে মোটরসাইকেলে ওই ছাত্রীকে তুলে কুয়াকাটায় নিয়ে যাওয়া হয়। ওই দিন রাত ৮টার দিকে কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্রের হোটেল ‘রাজু’ নামে একটি আবাসিক হোটেলে তাঁরা ওঠে। সেখানে জিসান ওরফে সোহেল স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে।

এরপর হোটেল ‘রাজু’ থেকে স্কুলছাত্রীকে নিয়ে ওঠানো হয় ‘সাগর নীড়’ নামে অপর একটি আবাসিক হোটেলে। হোটেলটির নিচতলার দুটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে রাতভর ধর্ষণ করে স্কুলছাত্রীকে। মঙ্গলবার সকালে ধর্ষক জিসান ওরফে সোহেল ওই ছাত্রীকে একটি পরিবহনে তুলে আমতলী পাঠিয়ে দেয়।

সে বাড়িতে ফিরে তার মায়ের কাছে পুরো ঘটনা জানায়। মঙ্গলবার দুপুরে ধর্ষণের স্বীকার ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আমতলী থানায় ধর্ষক জিসান ওরফে সোহেল, সহযোগী সাগরের নাম উল্লেখ করে ও অপর অজ্ঞাত  একজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

ওইদিন বিকেলে আমতলী থানা পুলিশ জিসান ওরফে সোহেলকে কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়ন থেকে এবং সহযোগী সাগরকে আমতলী পৌর এলাকার চৌরাস্তা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া জিসান ওরফে সোহেল মহিপুর ইউনিয়নের সেরাজপুর গ্রামের বাদশা গাজীর ছেলে পেশায় ভাড়াটে মোটরসাইকেল চালক। সহযোগী সাগর আমতলী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের সানু হাওলাদারের ছেলে।

গ্রেপ্তারকৃত ধর্ষক জিসান ও সহযোগী সাগরকে বুধবার দুপুরে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করা হলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. সাকিব হোসেন তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ধর্ষিত হওয়া শিক্ষার্থীর ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহআলম হাওলাদার বলেন, মোবাইল ফোনে বন্ধুত্ব করতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হওয়া ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আমতলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। মূল অভিযুক্ত ও এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ধর্ষিত হওয়া ছাত্রীর ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সাগর নীড় আবাসিক হোটেলের  রেজিস্টারে সঠিকভাবে নাম লিপিবদ্ধ করা হয়নি এ জন্য হোটেলটির রেজিস্টারও জব্দ করা হয়েছে।