শিবগঞ্জে পাগলির ফুটফুটে শিশুর জন্ম! সন্তান হারানোর আতঙ্কে মা

আব্দুর রহমান আব্দুর রহমান

শিবগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১২:৩৮ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০২১

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থানে ফুটফুটে এক পুত্র সন্তান জন্ম দিয়েছে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী।

শিশুটি জন্মের ৯দিন (১১) পর পাগলির কোল থেকে হারিয়ে যায় ৪দিন পর স্থানীয়দের চেষ্টায় পাগলির কোলে ফিরে এসেছে পাগলির শিশু পুত্রটি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ঐতিহাসিক মহাস্থানগড় হযরত শাহ সুলতান মাজার এলাকায় মানসিক ভারসাম্যহীন এক পাগলির গর্ভে সন্তান ধারণ হয়েছে। কিন্তু খোঁজ মেলেনি পিতার।

স্থানীয়রা জানান, গত ৩/৪ মাস হলো মহাস্থান মাজারে এই পাগলির আগমন। পরে ধীরে ধীরে অন্তঃসত্ত্বা দেখা যায়। এরপর প্রাকৃতিক নিয়মে প্রায় ২ সপ্তাহ আগে পাগলির কোলজুড়ে সুদর্শন ফুটফুটে একটি পুত্র সন্তান ভূমিষ্ট হয়। এরই মধ্যে শিশুটি জন্মের ৯ দিনপর হঠাৎ নিখোঁজ হয়। বেড়ে যায় পাগলির তীব্রতা। শিশুকে না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে শিশু সন্তান হারা পাগলি। সদ্য জন্মা শিশুটিকে বুকের দুধ দিতে না পেরেও অনেক ব্যথায় কাতর হয়ে চিৎকার করতে থাকে বলে স্থানীয়রা জানায়৷ পরে অনুসন্ধানে জানা যায়, শিশুটিকে ভালভাবে লালন পালন করতে মহাস্থান নামাপাড়া গ্রামের খোকন নামের যুবক নিজ দায়িত্বে ভরনপোষণ করে বড় করতে নিঃসন্তান এক নারীকে দেয়।

এদিকে শিশুকে হারিয়ে পাগলির উশৃংখল বেড়ে যায়। একপর্যায়ে শিশুটি চুরি হয়েছে বলে এলাকায় আলোচনার ঝড় ও তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে এলাকাবাসীরা সু-চেষ্টায় ওই পাগলির শিশু পুত্রকে নিয়ে যাওয়া যুবকের সন্ধান নিশ্চিত করে শিশুটিকে উদ্ধার করে ৪দিন পর পাগলির কোলে ফিরিয়ে দেয়। বর্তমান পাগলি শিশুটির মা মহাস্থান হযরত শাহ সুলতান মাজারের পাশে রয়েছে।
কিন্তু দুঃখজনক হলো পাগলি পুত্র সন্তান জন্ম দিয়ে পৃথিবীর আলো দেখালেও সেই সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের কোনো হদিস এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এখনো মেলেনি।
সন্তান ফিরে পাওয়ার পর, এবিষয়ে পাগলির সাথে কথা বলে শিশুটির নাম জানতে চাইলে, সে বলে “ছেলের নাম তুফান” ।

এবিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উন্মে কুলসুম সম্পা বলেন, পাগলির বাচ্চা হয়ে গাছতলায় বসবাস করছে এমন সংবাদ পেয়ে ওই রাতে প্রতূশ্রতিকে মাজার কর্তৃপক্ষ থেকে নির্মিত আশ্রয়ণ হিসেবে একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
সেখানে তার চিকিৎসা সেবারও ব্যবস্থা করা হবে।
পরে তিনি পাগলির শিশু পুত্রের পিতৃ পরিচয় খুঁজে বের করতে থানা পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।

পাগলির শিশু পুত্রকে হারানোর ভয় ও আতঙ্ক এখনো কাটেনি।
শিশুটিকে এক নজর দেখার জন্য প্রতিদিন উৎসুক জনতা ভিড় করছে।