‘লঞ্চের ঘটনায় বিএনপির বক্তব্য রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার বহিঃপ্রকাশ’

প্রকাশিত: ১১:৫৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৫, ২০২১

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড নিয়ে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর বক্তব্য তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার বহিঃপ্রকাশ।

শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার রামপুরায় বিটিভি ভবনে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ৫৮ বর্ষে পদার্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার আগে বৃহস্পতিবার রাতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনাকে বিএনপি নেতারা ‘সরকারের দুঃশাসনের ফল’ বলে মন্তব্য করা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মার শান্তি ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এক্ষেত্রে তদন্ত হচ্ছে এবং এটি দুর্ঘটনা না নাশকতা সেটি তদন্তে বেরিয়ে আসবে। যারা দোষী সাব্যস্ত হবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরই মধ্যে নিহতদের পরিবারের জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিক সাহায্য দেওয়া ও আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি মনিটরিং করছেন।’

‘কিন্তু এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেব ও মান্না সাহেবসহ অন্যান্য নেতারা যেসব বক্তব্য রাখছেন সেগুলো তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব থেকেই বলছেন’ বলে মন্তব্য করেন ড. হাছান মাহমুদ। তাহলে উন্নত দেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ও এ দেশে আগেও যেসব দুর্ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে তারা কী বলবেন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘এর সঙ্গে তো রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সবকিছুর সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে আসা অবান্তর। কেউ যদি বলেন, মান্না সাহেব ছয়বার দল বদল করেছেন, সেটিও কী সুশাসনের অভাবে? মির্জা ফখরুল সাহেবসহ অন্যান্য বিএনপি নেতারাও যারা খোলস বদলেছেন, সেটিও কী সুশাসনের অভাবে? এসব বক্তব্য রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া কিছু নয়।’

বিটিভির ৫৮ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ টেলিভিশন ১৯৬৪ সালে যাত্রা শুরু করেছিল। এ উপমহাদেশে তথা সারাবিশ্বে এটি প্রথম বাংলা ভাষার টিভি চ্যানেল। ভারতেও টেলিভিশন চালু হয় আমাদের পরে। সুতরাং বিটিভি একটি প্রাচীন চ্যানেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে দেশে এখন ৪৫টি টিভি চ্যানেলের লাইসেন্স দেওয়া আছে, ৩১টি টিভি চ্যানেল সম্প্রচারে আছে, বাকিগুলো সম্প্রচারের অপেক্ষায়।

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বেসরকারি টেলিভিশনগুলো যারা পরিচালনা করছেন ও প্রথিতযশা যেসব টিভি সাংবাদিকরা রয়েছেন, তাদের অনেকেরই হাতেখড়ি বাংলাদেশ টেলিভিশনে। তাই বিটিভি হচ্ছে টেলিভিশন চ্যানেলের আঁতুড়ঘর। এখন বিটিভির চারটি চ্যানেল সম্প্রচারে আছে ও আগামী সংসদ নির্বাচনের আগেই আমরা আরও ছয়টি চ্যানেল চালু করতে যাচ্ছি। বিটিভি, বিটিভি চট্টগ্রাম ও সংসদ বিটিভি এ তিনটি টেরেস্ট্রিয়াল চ্যানেল ক্যাবল নেটওয়ার্ক ছাড়া সারাদেশে সবাই দেখতে পায়। একই সঙ্গে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সারাবিশ্বে সবাই দেখতে পান।

‘দেশ গঠনে ও আবহমান বাংলার সংস্কৃতি লালনের জন্য বাংলাদেশ টেলিভিশনে নানা অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়ে আসছে এবং আজ এইচডি সম্প্রচার উদ্বোধনসহ বিটিভিকে আরও এগিয়ে নেওয়ার নানা পরিকল্পনা রয়েছে’, যোগ করেন তথ্যমন্ত্রী।

পরে মন্ত্রী বাংলাদেশ টেলিভিশনের ৫৮ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে বিটিভি ভবনে বঙ্গবন্ধু কর্নার, রংতুলিতে বঙ্গবন্ধুর চিত্রকর্ম ও এইচডি সম্প্রচার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক সোহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রধান, বিটিভির সাবেক মহাপরিচালক ম. হামিদ, বেসরকারি টেলিভিশনগুলোর পরিচালক, দেশবরেণ্য শিল্পীরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।