র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে ব্লিংকেনকে অনুরোধ জানাবেন মোমেন

প্রকাশিত: ৮:০৮ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৪, ২০২২
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে. ব্লিংকেন

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ফের আহ্বান জানাবে বাংলাদেশ। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে. ব্লিংকেনের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ আহ্বান জানাবেন।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীতে সোমবার (৪ এপ্রিল) ওয়াশিংটনে বৈঠক করবেন দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠকে যোগ দিতে শনিবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন ডিসির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন ড. মোমেন।

ঢাকা ত্যাগের আগে গণমাধ্যমকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী ৫০ বছরে আমাদের (বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র) দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কীভাবে আরো জোরদার হবে সে ব্যাপারে বৈঠকে আলোচনা করবো।

একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে অদ্ভুদ্যয়ের পর ওয়াশিংটনের সঙ্গে ৫০ বছরে একটি ভিন্ন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষপটে বাংলাদেশের সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ পুনর্বিন্যাস হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছর দু’দেশের মধ্যে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ হয়েছে। তবে গত ১০ ডিসেম্বর র‌্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওয়াশিংটন নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর এই প্রথমবার ড. মোমেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন। ব্যাপক দ্বিপাক্ষিক ইস্যুর পাশাপাশি তিনি এই নিষেধাজ্ঞাটি পুনর্বিবেচনা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনুরোধ জানাবেন।

ড. মোমেন বলেন, আমরা এই (নিষেধাজ্ঞা) ইস্যু উত্থাপন করবো। যেহেতু র‌্যাব একটি দক্ষ, কার্যকর এবং দুর্নীতিমুক্ত বাহিনী, তাই তিনি আশা করেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া আসবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিরাজ করছে এবং গত এক দশকের বেশি সময় ধরে দেশ ব্যাপক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করেছে। কিন্তু কখনো কখনো আমাদের সফল ঘটনাগুলো বহির্বিশ্বে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। আমরা আমাদের সাফল্যের কথা বৈঠকে তুলে ধরবো।

ড. মোমেন জানান, তিনি আইনের শাসন নিশ্চিত করতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডে দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি রাশেদ চৌধুরীকে হস্তান্তরের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করবেন। রাশেদ চৌধুরী এখন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি শান্তিপ্রিয় দেশ এবং এজন্য ঢাকা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনতে কম আগ্রহী। গত আলোচনাকালে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেওয়া জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন এগ্রিমেন্টের (জিএসওএমআইএ) খসড়াটি পরীক্ষা করে দেখছে ঢাকা।

ওয়াশিংটন চায় ঢাকা যেন দুটি প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এ দুটি হলো- জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন এগ্রিমেন্ট (জিএসওএমআইএ) এবং অ্যাকুইজিশন ক্রস সার্ভিসিং এগ্রিমেন্ট (এসিএসএ)।

এসব বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, খাদ্য নিরাপত্তা, নীল অর্থনীতি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও প্রযুক্তি হস্তান্তরে সম্পৃক্ত থাকতে চায়- যা জনকল্যাণের সঙ্গে সম্পর্কিত। বাংলাদেশ তার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে বিনিয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রেকে আমন্ত্রণ জানাবে।

অ্যান্টনি জে. ব্লিংকেনের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের ব্যাপারেও আলোচনা করবেন বলে জানান ড. মোমেন।