ভিপি নুরের উপর হামলার প্রতিবাদে প্রেস রিলিজ প্রকাশ

প্রকাশিত: ১:৪১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০১৯

ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুরের উপর সন্ত্রাসী হামলা ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এর নেতা কর্মীদের নানাবিধ হুমকির প্রতিবাদে আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে বেলা ১২ টায় এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

পরে ডাকসু সহসভাপতি নুরুল হক নুর দুপুর ১ টায় তার ফেইসবুক ওয়ালে প্রেস রিলিজ প্রকাশ করে ।

পাঠকের সুবিধার্থে প্রেস রিলিজ হুবহু তুলে ধরা হলো।

  • ১৪ ই অাগস্ট চর বিশ্বাস থেকে অামার বোনের বাড়ি দশমিনা যাওয়ার পথে উলানিয়া বাজারে পটুয়াখালী – ৩ এর সাংসদ এস.এম শাহজাদা সাজুর নির্দেশে চাঁদাবাজ ও মাদকব্যবসায়ী, গলাচিপা উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন শাহ এর নেতৃত্বে তার ভাই নুরে অালম, লিটু পেদা, অাব্বাস পেদা, পৌর অাওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুল ইসলাম রণো, উপজেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক,উলানিয়া যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিল, যুবলীগ নেতা ইদ্রিস, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক অাহ্বায়ক ফরিদ অাহসান কচিন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শরীফ অাহমেদ অাসিফ, ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ, তূর্য্যসহ অাওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের প্রায় শতাধিক নেতা-কর্মীরা অামাকে হত্যার উদ্দেশ্যে রড,স্টীলের পাইপ ও চাপাতি নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।হামলায় প্রায় ২০-২৫ জনকে অাহত, ১০ টি মটরসাইকেল ভাংচুর, ২ টি ডিসএলঅার ও ৮৯ হাজার টাকা ছিনতাই হয়। অাহতদের মধ্যে অমি নিজে, রবিউল, ইব্রাহিম, জাহিদ, রিয়াজসহ ৫ জন গুরুতর অাহত হই।
  • সন্ত্রাসীরা শুধু হামলা করেই ক্ষান্ত হয়নি অামাকে চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত করেছে। ডাক্তার সিটি স্ক্যান ও ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করার জন্য বরিশাল মেডিকেলে রেফার করলেও সন্ত্রাসীরা এবং পুলিশ অামাকে জোর করে বাসায় পাঠিয়ে দেয় এবং এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য অামাকেও অামার পরিবারকে নিয়মিত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
  • গত ৩০ শে জুন ২০১৮ থেকে এ পর্যন্ত ভিপি হওয়ার পূর্বে ৩ বার(৩০ শে জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে, ২৪ জানুয়ারি বাংলা একাডেমি ও ১১ ই মার্চ রোকেয়া হলে) এবং ভিপি হওয়ার পর ৫ বার (১২ ই মার্চ টিএসসি, ২ এপ্রিল এস.এম হল,২৫ মে ব্রাক্ষণবাড়িয়া, ২৬ মে বগুড়া ও ১৪ অগাস্ট উলানিয়া) মোট ৮ বার ছাত্রলীগ ও অাওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের দ্বারা হামলার শিকার হই।প্রতিবার প্রকাশ্যে ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটলে ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।বরং কোন কোন ক্ষেত্রে পুলিশের সহযোগিতায় চেয়েও পাওয়া যায় নি। পুলিশের নিরব ভূমিকা ছিলো সন্ত্রাসীদের সহায়ক।
  • সর্বশেষ ১৪ অগাস্টের ঘটনার দিন হামলা হতে পারে এমন অাশঙ্কায় গলাচিপা পুলিশের সহযোগিতা চাইলেও ওসি কোন ধরণের সহযোগিতা করেনি।এমনকি পুলিশের উপস্থিতিতেও সন্ত্রাসীরা অামাদের উপর হামলা চালায়এবং পুলিশ ও অামার অাত্নীয়,সমর্থকদের গ্রেফতারের হুমকিও দেয়।সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে নগ্ন হামলা চালালেও ওসি হামলার কথা অস্বীকার করে।
    এমতাবস্থায় অামি অামার প্রাণনাশের শঙ্কাবোধ করছি।ছাত্রসমাজ তথা দেশবাসীর কাছে অনুরোধ, অাপনারা অামার তথা অন্যায়ের-অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবিতে সোচ্চার হোন। অামি কোন অন্যায়- অপরাধ করিনি। শুধুমাত্র অন্যায় – অনিয়মের প্রতিবাদ করার কারণেই অামি ও ‘ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এর নেতা-কর্মীরা বার বার ক্ষমতাসীন দলের রোষানলের স্বীকার হয়েছি। ক্ষমতাসীন দলের নেতা ছাড়াও ও সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার লোকদের কাছ থেকেও প্রতিনিয়ত হুমকির সম্মুখীন হচ্ছি।
  • মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ,কিছুদিন অাগেও বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অাপনি নিজেই বলেছেন সরকারের সমালোচনা করতেই বাধা নেই,দেশ ভিন্ন মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। তাই অাপনার কাছে অামাদের অনুরোধ ভিন্নমতের মানুষের উপর দমন-পীড়ন বন্ধ করে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখতে অাপনার দলের নেতা-কর্মী ও অাইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন। দেশে শাসন প্রতিষ্ঠায় দলীয় প্রভাবমুক্ত করে অাইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কার্যকর করুন।
    ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এর নেতা-কর্মীদের অযথা হয়রানি বন্ধ করুন এবং যারা হামলার সাথে জড়িত তাদেরকে অতিদ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের অাওতায় অানার নির্দেশ দিন। কারণ অন্যায়ভাবে কাউকে হয়রানি করে তার মুখ বন্ধ রাখা যায় না।

শেষে তিনি বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের একটা লাইন তুলে ধরে বলেন যে,জাতির পিতাই বলে গেছেন ‘বাঙালি জাতিকে তোমরা দাবায়া রাখতে পারবা না ‘।