‘বোন’ শেখ হাসিনাকে পূর্ণ সমর্থন, ঢাকা-১৭ আসন ছাড়লেন এইচএম এরশাদ

প্রকাশিত: ১১:১৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৮

নিজস্ব প্রতিবেদক : সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে সংসদ নির্বাচনে ‘বোন’ শেখ হাসিনাকে পূর্ণ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি জাতীয় পার্টির সব প্রার্থীকে মহাজোটের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার নির্দেশ দেন। ঢাকা-১৭ আসন থেকে সরে দাঁড়িয়ে নিজে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আকবর হোসেন পাঠান ফারুককে সমর্থন জানান।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রংপুরের পাশাপাশি ঢাকা-১৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চিত্রনায়ক ফারুক (আকবর হোসেন পাঠান)।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট থেকে নির্বাচনের ঘোষণা দেয়ার পরও শতাধিক আসনে জোটের সিদ্ধান্তের বাইরে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রাখার পর নানা গুঞ্জনের মধ্যে গত ১০ ডিসেম্বর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যান এরশাদ। ভোটের তিন দিন আগে বুধবার রাতে তিনি দেশে ফিরে আসেন।

সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ বলেন, তার ‘বোন’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সমর্থন জানিয়ে জাতীয় পার্টির উন্মুক্ত আসনের প্রার্থীরা মহাজোটকে সমর্থন করবেন। তিনি নিজেও ঢাকা-১৭ আসন ছেড়ে দিচ্ছেন। এরশাদ এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আকবর হোসেন পাঠান ফারুককে সমর্থন জানিয়েছেন।

এ সময় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনের পরপরই ঢাকা-১৭ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আকবর হোসেন পাঠান ফারুক এরশাদের সঙ্গে দেখা করেন।

এরশাদ বলেন, ১৪৬টি আসনে দলের উন্মুক্ত প্রার্থীরা মহাজোটকে সমর্থন জানাবেন। তবে যেসব জায়গায় জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা জয়লাভ করার মতো অবস্থায় আছেন, সেখান থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার করা হবে না। তবে মহাজোট যে সিদ্ধান্ত নেবে, প্রার্থীদের তা মেনে নেয়ার কথাও বলেন তিনি।

এরশাদ বলেন, ‘মহাজোট মনোনীত যেসব প্রার্থী আছে, তারা ছাড়া অন্যদের সরে যেতে হবে। মহাজোটকে বিজয়ী করার জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।’

নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন এইচএম এরশাদ। তিনি বলেন, নির্বাচনের আয়োজন সন্তোষজনক। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাও সন্তোষজনক। এরশাদ বলেন, ‘মহাজোট সরকার উন্নয়নের রোল মডেল। এবারের নির্বাচনে মহাজোটই জিতবে। কারণ বিএনপির অতীত ইতিহাস ভালো নয়। নৌকা নয়, ধানের শীষ ঠেকাতে জাপার আলাদা প্রার্থী।’

নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার কবি মানুষ, এ কারণে উল্টাপাল্টা বকছে। লেভেল প্লেয়িং কী জিনিস? যারা লেভেল প্লেয়িং নিয়ে কথা বলছে, তারা কি আদৌ এর অর্থ জানে?’

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচনে ঢাকায় জাতীয় পার্টির দুই প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আবু হোসেন বাবলা ও কাজী ফিরোজ রশীদ। এদের জেতার সম্ভাবনা কম বলেও মন্তব্য করেন তিনি। রংপুরের একটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এরশাদ।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি রংপুরে এতদিন যেতে পারিনি। তবে এখন যাব। সেখানে মানুষ আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আশা করি, রংপুরবাসী এবার এ আসনটি মহাজোটকে উপহার দেবে।’

এদিকে এরশাদের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী রাতে যুগান্তরকে জানান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, মহাজোটের বাইরে যারা জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে লাঙল প্রতীক নিয়ে মুক্তভাবে নির্বাচন করছেন, তারা সবাই লাঙল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন। এতে বিভ্রান্তির অবকাশ নেই।