বরিশাল-২: বিএনপি প্রার্থীর গুলি, ছাত্রলীগ-যুবলীগের ১১ কর্মী আহত

প্রকাশিত: ১১:০৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৮

বরিশাল প্রতিনিধি : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এস সরফুদ্দিন আহমদ সান্টু নিজের পিস্তল দিয়ে প্রকাশ্যে গুলি করেছেন। পাশাপাশি তার সমর্থকরা হামলা চালিয়ে ছাত্রলীগ যুবলীগের ১১ নেতাকর্মীকে মারধর ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে।

সোমবার বিকালে বানারীপাড়া পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিএনপি প্রার্থী এস সরফুদ্দিন আহমদ সান্টু তার নিজের রিভলবার দিয়ে একাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেন।

আহদের মধ্যে গুরুতর তিনজনকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পৌর শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনার পর পৌর শহরে বিজিবি ও পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।

অপরদিকে এ ঘটনার পর বিএনপি প্রার্থী এস সরফুদ্দিন আহমদ সান্টুসহ হামলাকারীদের শাস্তির দাবি করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পৌর শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে।

স্থানীয় বাসিন্দা তুরান বেপারীসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, বিএনপি প্রার্থী এস সরফুদ্দিন আহমদ সান্টু ২টি মাইক্রোসহ ৬টি গাড়ি ও ৮-১০টি মাহেন্দ্র-আলফা এবং ২০-২৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে বিকাল ৪টার দিকে বানারীপাড়ায় প্রবেশ করেন। এ সময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের বেশ কয়েকজন কর্মী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী শাহে আলমরে নৌকা প্রতীকের লিফলেট বিতরণ করছিলেন।

হঠাৎ করে গুলির শব্দ শুনে এলাকার লোকজন ছুটোছুটি শুরু করে। এরই মধ্যে সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টুর সঙ্গে থাকা কর্মীরা ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীদের এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে বিএনপি প্রার্থী সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু ও তার সঙ্গে থাকা দুজনে গাড়ি থেকে বের হয়ে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি করতে থাকে।

এ সময় তার কর্মীরা তুরানের বাড়ির সামনে থাকা একটি নৌকা ভাঙচুর ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের ১১ জনকে পিটিয়ে আহত করে। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে সন্টু ও তার লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এ সময় আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

এদিকে হাসপাতালে ভর্তি থাকা গুরুতর আহত শাহিন সরদার জানান, ঘটনার সময় তিনি যুবলীগ নেতা দুলাল তালুকদারের মোটরসাইকেলে করে পৌর শহরে আসেন। তারা বাসস্ট্যান্ড পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে তাদের মোটরসাইকেলের সামনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী শাহে আলমের নৌকা প্রতীকের লিফলেট লাগানো দেখে সান্টু সমর্থকরা তাদেরকে লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করে।

এতে দুলাল ও শাহিন গুরুতর আহত হয়। খবর পেয়ে টেম্পুস্ট্যান্ড থেকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের বেশকিছু নেতাকর্মী ঘটনাস্থলে ছুটে আসলে বিএনপি প্রার্থী এস সরফুদ্দিন আহমদ সান্টু তার গাড়ি থেকে নেমে নিজের অস্ত্র দিয়ে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেন। ওই সময় তার সঙ্গে থাকা কর্মীরা ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীদের পেটাতে থাকে।

এতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম দুলাল, শাহি সরদার, রাহাদ মাল, রাজু খান, মশিউর রহমান সুমন, ইব্রাহিম মৃধা, সুজন খান, আনোয়ার হোসেন, সুমন মোল্লা, মিন্টু, আল আমিন সিকদার গুরুতর আহত হয়। আহতদের মধ্যে শফিকুল ইসলাম দুলাল, রাজু খান ও ইব্রাহিম মৃধাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়াও বিএনপি ক্যাডাররা যাওয়ার সময় নারায়ণপুর আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর ও দলীয় নেতাকর্মীদের মারধর করে।

এ বিষয়ে বিএনপি প্রার্থী এস সরফুদ্দিন আহমদ সান্টু বলেন, আমি বানারীপাড়ায় উঠান বৈঠক করার জন্য প্রশাসনের কাছে অনুমতি নিতে গিয়েছিলাম। এ সময় আওয়ামী লীগের কর্মীবাহিনী আমার ওপর হামলা করলে আমি আকাশের দিকে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করি।

এ বিষয়ে থানার ওসি মো. খলিলুর রহমান বলেন, বিকালে বিএনপি প্রার্থী এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু বানারীপাড়ায় আসেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদের মুখোমুখি হয়। এ সময় তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হলে বিএনপি প্রার্থী সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু ৪ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেন।

তিনি বলেন, এ সময় তার সঙ্গে থাকা কর্মীরা গাড়ি থেকে নেমে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। এতে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি জানান।