বগুড়ায় ছাত্রলীগ নেতার রক্তবাণিজ্য

মিরাজুল ইসলাম মিরাজুল ইসলাম

জেলা প্রতিনিধি, বগুড়া

প্রকাশিত: ৫:২৪ অপরাহ্ণ, মে ৪, ২০২০

রক্তদান একটি মহৎকাজ। বগুড়াসহ সারাদেশে রয়েছে অসংখ্য অনলাইন অথবা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। কিন্তু এই মহৎকাজের আড়ালে অসহায় মুমূর্ষ রোগীর স্বজনদের হয়রানি ও মোটা অংকের টাকা গ্রহণ করেন বগুড়া শহরের সেউজগাড়ীস্থ ‘স্বেচ্ছায় রক্তদান ইউনিটে’র সভাপতি ও ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল রহমান।

জানা গেছে, ২০১৯ সালে পথচলা শুরু করে ‘স্বেচ্ছায় রক্তদান ইউনিট’। তাদের নেই কোনো রেজিস্ট্রেশন। বগুড়ার বাছাইকৃত বিত্তবান ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ করে আসছে। সেউজগাড়ী কালের বাজার মোড়ের বিষুর চায়ের দোকান ও বাড়িতে ২০১৯ সালে দলবল নিয়ে হামলা করে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে। কিন্ত প্রভাবশালীদের দাপটে ন্যায্য বিচার পায়নি চা দোকানি বিষু। তাছাড়াও সেউজগাড়ীর বিভিন্ন ছাত্রাবাসে মিছিল মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করলে তাদের সাথে অশালীন আচরণ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, স্বেচ্ছায় রক্তদান ইউনিটের সভাপতি ফয়সাল রহমানের নাম্বারে রক্তের জন্য ফোন করলে রক্তের ব্যবস্থা করছি, এমন কথা বলে রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে বিকাশে টাকা নেয়। কিন্ত রক্ত দিতে সক্ষম না হওয়ায় রোগীর স্বজনরা প্রতারণার শিকার হয়।

সরকারি আজিজুল হক কলেজের রক্তদান সংগঠনের বাঁধন ইউনিটের সহ-সভাপতি মুন্নি খাতুন জানান, আমাদের সংগঠন থেকে যারা রক্তদান করে তারা সবাই শিক্ষার্থী। তাই রোগীর স্বজনরা তাদেরকে স্ব-ইচ্ছায় যাতায়াত ভাড়া দেন।

আলোকিত বগুড়ার নির্বাহী প্রধান এডভোকেট ফেরদৌসী আক্তার রুনা জানান, যারা স্বেচ্ছায় কাজ রক্তদান করে শুধুমাত্র কমলপানীয় ও স্যালাইন খাওয়ালে সেটা গ্রহণ করা হয়। বাড়তি কিছু গ্রহণ করা হয় না। আরা যারা রক্তদানের নামে প্রতারণা করে তারা কোনো স্বেচ্ছাসেবী নয়।

বগুড়া সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সামির হোসেন মিশু জানান, যারা রক্তদানের নামে বাণিজ্য করে তারা মুলত রক্ত ব্যবসায়ী তারা কোনো স্বেচ্ছাসেবী নয়।

বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অসিম কুমার রায় জানান, রক্তব্যবসায়ীদের কখনো ছাত্রলীগ বর্দাস্ত করে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখে সাংগঠনিক পদ-পদবি থেকে বহিষ্কারসহ তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।