নওগাঁয় বন্যার পানিতে ভেসে গেছে ২৫ কোটি টাকার মাছ

চম্পক কুমার চম্পক কুমার

জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ

প্রকাশিত: ৩:৩৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৭, ২০২০
নওগাঁয় এবারে পর পর দুই দফায় বন্যার পানিতে ৫৬৩টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে করে জেলার কয়েকটি উপজেলার ৩১৮ জন মাছচাষী ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছে। অধিকাংশ মাছচাষীরা বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করায় এবারের বন্যা মাছচাষীদের সব কিছু শেষ করে দিয়েছে। পুকুরের মাছ হারিয়ে এখন তারা চোখে সরষের ফুল দেখছেন।
এবারের বন্যায় জেলার আত্রাই উপজেলার পুকুরের মাছ সবচেয়ে বেশি পানিতে ভেসে গেছে। এই উপজেলার ৩০৭ টি পুকুর থেকে ২১কোটি টাকা মূল্যের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার আত্রাই উপজেলা উত্তরবঙ্গের মৎস্যভান্ডার হিসেবে পরিচিত। এই উপজেলায় উৎপাদিত মাছের সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে। সম্প্রতি হয়ে যাওয়া দুই দফায় বন্যায় আত্রাই উপজেলার ৩০৭টি পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। নওগাঁ সদর উপজেলার ১৩৪টি পুকুর থেকে ২কোটি ৪৩লাখ টাকা মূল্যের মাছ, মান্দা উপজেলার ৭০টি পুকুর থেকে ৫১লাখ টাকা মূল্যের মাছ, পোরশা উপজেলার ২০টি পুকুর থেকে ৩০লাখ টাকা মূল্যের ও রাণীনগর উপজেলার ৩২টি পুকুর থেকে ১৫লাখ ৭৪হাজার টাকা মূল্যের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এতে করে জেলায় বন্যার পানিতে ২৫কোটি ৫লাখ ২৪হাজার টাকার মাছ ভেসে গেছে।
জেলার রাণীনগর উপজেলার কাটরাশইন গ্রামের মাছচাষী মন্টু সিপাই বলেন, নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে হঠাৎ করেই পানি প্রবেশ করে আমার পুকুরের মাছ সব পানিতে ভেসে গেছে। মাছের সঙ্গে সঙ্গে ভেসে গেছে আমার সবকিছু। কারণ এই পুকুরের মাছই ছিলো আমার শেষ সম্বল। আমি ঋণ নিয়ে পুকুরে মাছ চাষ করেছিলাম। ভেবেছিলাম কিছুদিন পর মাছ বিক্রি করে ঋণগুলো পরিশোধ করবো। কিন্তু তা আর হলো না। এখন আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। তাই যে সব মাছ চাষীরা ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছে সেই সব চাষীদের যদি সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক ভাবে সহায়তা করা কিংবা ভুর্তকি না দেয়া হয় তাহলে মাছচাষীদের পরিবার-পরিজন নিয়ে পথে বসতে হবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেন জানান, বন্যায় যে সব মাছ চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছেন তাদের একটি তালিকা তৈরি করেছি। সেই তালিকাটি সরকারের কাছে পাঠিয়ে দিবো। পরবর্তিতে যদি ক্ষতিগ্রস্থ্য মাছচাষীদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা আসে তাহলে সেগুলো মাছচাষীদের মধ্যে বিতরন করা হবে।