দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা

প্রকাশিত: ১:৫৪ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৬, ২০১৯

দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা বাস্তবায়িত হলে অভিভাবকরা স্বস্তি পাবেন।

দেশে বর্তমানে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা কর্মসূচি চালু রয়েছে। অবৈতনিক শিক্ষার এই সীমা বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এই চিন্তা অনুযায়ী ২০২৫ সালের মধ্যে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা চালু হওয়ার কথা। প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে ধাপে ধাপে। প্রথম ধাপে এ বছরের জুলাই মাসে ষষ্ঠ শ্রেণী অন্তর্ভুক্ত হবে অবৈতনিক শিক্ষায়।

উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা কর্মসূচি নিঃসন্দেহে সরকারের একটি মহৎ উদ্যোগ। এই কর্মসূচি ইউরোপের কল্যাণ রাষ্ট্রের ধারণার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। শিক্ষা মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। এই চাহিদা পূরণে যখন সরকার এগিয়ে আসে, তখন রাষ্ট্রটি কল্যাণ রাষ্ট্রের একটি শর্ত পূরণ করে বৈকি। বস্তুত শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রভূত উন্নতি করেছে। গত দশ বছরে বিনামূল্যে পাঠ্যবই প্রদানসহ শিক্ষার নানা ক্ষেত্রে সরকার প্রণোদনা জুগিয়েছে, যার ইতিবাচক ফল পেতে শুরু করেছে দেশবাসী।

দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক করা হলে ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকরা প্রাতিষ্ঠানিক ব্যয় থেকে রেহাই পাবেন। বলাবাহুল্য, দেশের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ, বিশেষত গ্রামীণ জনপদের মানুষ তাদের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সন্তানদের শিক্ষা ব্যয় মেটাতে গিয়ে আর্থিক টানাপোড়েনে ভোগেন। এতদিন পর্যন্ত প্রাইমারি শিক্ষা অবৈতনিক ছিল। বর্তমান কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও আর্থিকভাবে স্বস্তিতে থাকবেন।

সেক্ষেত্রে সন্তানদের শুধু খাতা-কলম, জামা-কাপড়ের খরচই বহন করতে হবে তাদের। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টিউশন ফিসহ অন্যান্য খাতে খরচ করতে হবে না। এ এক বড় স্বস্তি। অবৈতনিক শিক্ষা যে ছাত্রছাত্রীদের ঝরে পড়া (ড্রপআউট) রোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে, সেটাও শিক্ষাক্ষেত্রের এক বড় অর্জন হবে নিঃসন্দেহে। বর্তমানে মাধ্যমিক স্তরে জেন্ডার সক্ষমতা শুধু নিশ্চিতই হয়নি, ছাত্রীর সংখ্যা এখন ছাত্র সংখ্যার চেয়ে বেশি।

উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা চালু হলে সেখানেও যে জেন্ডার সমতা নিশ্চিত হবে, সেটাও বলা যায় জোর দিয়ে। দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা কার্যক্রমের যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া যাতে কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয়, সেদিকে সরকারের মনোযোগ প্রত্যাশা করছি আমরা।