দুর্নীতি নিয়ে কথা বলায় ওয়াসার দুই কর্মকর্তা বরখাস্ত

প্রকাশিত: ১২:৫৫ পূর্বাহ্ণ, মে ১২, ২০২২

ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী সমিতির টাকা আত্মসাতের বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলায় এক কর্মকর্তা স্থায়ী ও আরেক কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। বরখাস্ত হওয়া দুই কর্মকর্তা হলেন- শহিদুল ইসলাম ও শাহাব উদ্দিন সরকার।

শহিদুল ইসলাম ঢাকা ওয়াসার উপ-প্রধান প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) ও ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি। আর শাহাব উদ্দিন সরকার ঢাকা ওয়াসার অঞ্চল–২ এর পাইপলাইন পরিদর্শক (পিএলআই) ও সমিতির বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক।

গত ৮ মে ঢাকা ওয়াসার সচিব শারমিন হক আমীর সই করা অফিস আদেশে শহিদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। অফিস আদেশে বলা হয়, শহিদুল কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে গণমাধ্যমে ঢাকা ওয়াসা সম্পর্কে বিরূপ ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন। তার এই কার্যকলাপের কারণে ঢাকা ওয়াসার ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে। গণমাধ্যমে তার কথা বলা অফিস শৃঙ্খলা পরিপন্থি ও গুরুতর শাস্তিযোগ্য অপরাধের শামিল বলে বরখাস্তের আদেশে উল্লেখ করা হয়। তাতে বলা হয়, ঢাকা ওয়াসার চাকরি প্রবিধানমালা অনুযায়ী এটি আওতাভুক্ত অপরাধ। তাই জনস্বার্থে তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

এর আগে গত ১৫ মার্চ শাহাব উদ্দিন সরকারকে দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও অসদাচরণের অভিযোগে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করেছে ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওয়াসার একাধিক কর্মকর্তা জানান, যাদের বিরুদ্ধে সমিতির ১৭৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, তাদের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ওয়াসা। উল্টো এ অভিযোগ নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলায় শাহাব উদ্দিনকে এপ্রিল মাসের শেষ দিকে বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু তারিখ দেখানো হয়েছে মার্চ মাসের।

ওই কর্মকর্তারা আরও জানান, সম্প্রতি ঢাকা ওয়াসার কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির ১৭৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। সমবায় অধিদপ্তরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সমিতির অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে শহিদুল ইসলাম ও শাহাব উদ্দিন সরকার সম্প্রতি বেসরকারি ৭১ টেলিভিশনের একটি অনুষ্ঠানে কথা বলেন।

ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির ওপর এ নিরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করে ২০২১ সালের জুন মাসে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সমবায় অধিদপ্তর ও ঢাকা ওয়াসাকে দেওয়া হয়। এতে আর্থিক অনিয়ম নিয়ে অধিকতর তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। যদিও ওয়াসা কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

এই বিষয়ে জানতে বুধবার (১১ মে) রাত সাড়ে ৯টায় ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খানের ফোনে একাধিক কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।