দলগুলোর অভিযোগ প্রশাসনকে চাপে রাখার কৌশল: ডিএমপি কমিশনার

প্রকাশিত: ৬:৩২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৮

নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবে কোনো কোনো দল বা প্রার্থীরা অভিযোগ করছেন বলে মনে করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

বড়দিন উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বনানী ক্যাথলিক চার্চ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমনটাই বলেন তিনি।

‘নির্বাচনী কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে’ বিভিন্ন প্রার্থী বা দলের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার বলেন, রাজনীতিবিদরা অভিযোগ দিতে পারেন সে ব্যাপারে বিতর্ক করবো না। কারণ আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী।

‘তারা নানা ধরনের অভিযোগ করতে পারেন। আমি মনে করি বিরোধী পক্ষকে, নির্বাচন কমিশনকে কিংবা প্রশাসনকে একটি চাপের মুখে রাখার কৌশল এটি। এটা কোনো কোনো দলের স্ট্র্যাটেজিও হতে পারে।’

নির্বাচনে ভোট চাওয়ায় কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই উল্লেখ করে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, একটি নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাসী, পেশিশক্তি যারা প্রয়োগ করতে পারে, দখলবাজ, চাঁদাবাজদের নিয়ন্ত্রণ করা নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের দায়িত্ব। আমরা সেই কাজটিই করে যাচ্ছি। কোনোভাবে ভোট কেন্দ্রে বা ভোটগ্রহণের আগে ও পরে যেন কেউ জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্ন করতে না পারে সেজন্য আমরা সতর্ক আছি।

‘যারা অভিযোগ করছে, তারা তাদের স্বার্থ চিন্তা করে প্রশাসনকে চাপে ফেলার জন্য মনগড়া ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে বলে দেখতে পাচ্ছি। তবে ২/৪টা সত্যও রয়েছে। সেগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে তা‍ৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে,’ যোগ করেন তিনি।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকা মহানগর এলাকায় নির্বাচনের জন্য অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি টিম নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের জন্য নির্বাচন কমিশনের নেতৃত্বে পুলিশ প্রশাসন প্রস্তুত জানিয়ে তিনি বলেন, আগের তুলনায় এবার ঢাকায় সহিংসতা ও গোলযোগ খুবই কম। আমরা নগরবাসী ও বাংলাদেশের প্রত্যেকটি নাগরিককে বার্তা দিতে চাই, সমন্বিত পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী উৎসবমুখর পরিবেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

‘ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরতে কাউকে যেন বিড়ম্বনার শিকার হতে না হয় সেজন্য আমরা ও সশস্ত্র বাহিনী তৎপর রয়েছি। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের প্রস্তুতি সন্তোষজনকভাবে সম্পন্ন হচ্ছে।’

নির্বাচন নিয়ে স্যোশাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানো হচ্ছে জানিয়ে পুলিশের এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, স্যোশাল মিডিয়ায় নানা ধরনের গুজব রটানো হচ্ছে। অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়, সেনাবাহিনীর নামেও ফেসবুকে ভুয়া পেজ খুলে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এসব গুজব ও মিথ্যা প্রোপাগান্ডার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

নির্বাচনী মাঠে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ, আনসার, প্রশাসন ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ সবার মধ্যে চমৎকার সমন্বয় রয়েছে বলেও জানান আছাদুজ্জামান মিয়া।

জনগণের প্রতি উদ্দেশ্য করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমাদের ওপর আস্থা রাখুন, আমরা টিম হিসেবে সবাই দেশের জন্য কাজ করছি। দেশের আইন ও সংবিধানের বাইরে যাবার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচনকে বিতর্কিত করার যে অপচেষ্টা সে সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।