ত্রানের মহড়া ছড়াতে পারে করোনা

মিরাজুল ইসলাম মিরাজুল ইসলাম

জেলা প্রতিনিধি, বগুড়া

প্রকাশিত: ১০:২০ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৮, ২০২০

করোনায় ত্রাণ বিতরণের ‘মহড়া’ আতঙ্ক ছড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত। প্রশ্ন উঠেছে ত্রাণ বিতরণের পদ্ধতি নিয়ে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্বের নীতি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ত্রাণ বিতরণের সময় ফটোসেশন।

এমনও দেখা গেছে যারা ত্রাণ নিচ্ছেন তারা সামাজিক দূরত্ব মানছেন না। কিন্তু যারা দিচ্ছেন তারা গাদাগাদি করে দাঁড়ান। ত্রাণ দেয়ার সময় ছবি তুলতে গিয়ে আরো ঘনিষ্ঠ হন ত্রাণ প্রার্থীদের৷ সব মিলিয়ে ত্রাণই এখন যেন নতুন এক বিপদের নাম। দেশের পৌরসভা ও ইউনিয়ন ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক স্বেচ্ছাসেবক টিম ত্রান বিতরণকালে হিমশিম খাচ্ছে। অনেক এলাকায় দেখা গেছে ত্রান বিতরণ করতে গিয়ে বাজেটের চেয়ে লোকসমাগম বেশি দেখে ত্রানদাতা পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে।

সকল শিল্প কারখানা বন্ধ রিক্সা-ভ্যানচালক, খেটে খাওয়া মানুষগুলো আজ নির্বিকার। নিম্নবৃত্তরা ত্রান পাচ্ছে। কিন্তু চাপা কান্নায় জর্জরিত মধ্যবিত্তরা। এই ক্রান্তিকালেও থেমে নেই চালচোরদের দৌড়াত্ব। ইতোমধ্যে বগুড়া, সিংড়াসহ কয়েকটি স্থানে হাতেনাতে চালচোরদের ধরেছে জনগণ। এর থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়া দরকার। আমরা কতটা নিষ্ঠুর মানুষ হলে ত্রানের চাল চুরি করি।
সরকারি বিশেষ অনুদান ওএমএস ডিলারের মাধ্যে চাল বিক্রিতেও মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব।

গ্রামের চায়ের দোকানে শহরের লোকজন গিয়ে ভিড় জমাচ্ছে বাড়ছে করোনা ঝুঁকি। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী বিভিন্নভাবে সতর্ক করছে।
যেভাবে ত্রাণ বিতরণ হচ্ছে গাদগাদি করে, করোনার স্বাস্থ্য বিধি না মেনে তাতে আসলে করোনা আরো দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। ফটোসেশন আর প্রচারের লোভে তারা কী ভয়ঙ্কর ক্ষতি করছেন তারা হয়তো নিজেরা তা বুঝতে পারছেন না।

কাজেই, সরকারি বেসরকারি সকল পর্যায়ে ত্রাণ দেয়ায় শৃঙ্খলা আনা প্রয়োজন এখনই। সবচেয়ে ভালো হয় স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিধি মেনে তালিকা করে ত্রাণ বাসায় পৌঁছে দেয়া। তবে বস্তি বা ভাসমান মানুষের জন্য নিরাপদ কোনো জাগায় তালিকা করে ত্রাণ বিতরণ করা যেতে পারে। সেখানে প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নিয়ে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে এটা করোনার সময়। আমরা যেন সেবা করতে গিয়ে ক্ষতি না করে ফেলি।