টাকার জন্যই সালেহ খুন, সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী গ্রেফতার

প্রকাশিত: ৪:৪৫ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৮, ২০২০
ফাহিম সালেহ। ছবি: রয়টার্স

রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ (৩৪) হত্যার ঘটনায় তার ব্যক্তিগত সহকারীকে গ্রেপ্তার করেছে নিউইয়র্ক পুলিশ।

দুই পুলিশ কর্মকর্তার বরাতে নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, আজ শুক্রবার ভোরে ফাহিমের ব্যক্তিগত সহকারী টাইরেস ডেভন হাসপিলকে (২১) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার বিকালে ফাহিমের নিজের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তার ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে নিউইয়র্ক পুলিশ। পুলিশ জানায়, এক দিন ধরে তার কোনো খবর না পাওয়ায় খোঁজ জানতে ফাহিমের বোন ওই অ্যাপার্টমেন্টে যান। সেখানে গিয়ে তার খণ্ডিত মরদেহ দেখে পুলিশে খবর জানান তিনি।

তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, মরদেহ উদ্ধারের একদিন আগে অর্থাৎ সোমবার তাকে হত্যা করা হয়।

নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, তার হাত-পা, মাথা সবকিছু খণ্ড-বিখণ্ড করা হয়েছিল। তার দেহের কিছু অংশ প্লাস্টিকের বড় ব্যাগে রেখে দেওয়া হয়েছিল। কাছাকাছি একটি বৈদ্যুতিক করাত প্লাগড ইন অবস্থায় ছিল।

এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ফাহিমের কাছ থেকে কয়েক হাজার ডলার চুরি করেন তার ব্যক্তিগত সহকারী টাইরেস। ফাহিম এ চুরির বিষয়টি ধরতে পারলেও কাউকে জানাননি। গোয়েন্দাদের মতে, এই কারণে তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, হত্যার পর ওই স্থানটি পরিষ্কার করার জন্য জীবাণুনাশক সামগ্রী কিনতে হত্যাকারী ম্যানহাটনের পশ্চিমের ২৩ নম্বর স্ট্রিটের একটি হোম ডিপোতে গিয়েছিলেন। সেসময় গাড়ির জন্য ভাড়া দিতে গিয়ে ফাহিম সালেহর সহকারী নিজের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন।

পুলিশ কর্মকর্তা জানান, হত্যাকারী কালো পোশাক এবং কালো মাস্ক পরেছিলেন। সঙ্গে একটি ব্যাগ ছিল। তিনি ফাহিমকে ভবনের লিফট থেকে তার বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে পর্যন্ত অনুসরণ করে বাসার ভেতরে প্রবেশ করেছিলেন।

ফাহিমকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে অজ্ঞান করে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। লিফটের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকারী লিফটের ভেতরে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে কিছু পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছেন।

পুলিশ কর্মকর্তারা এই হত্যাকাণ্ডকে একটি পরিকল্পিত ও ‘পেশাদার হত্যাকাণ্ড’ বলে উল্লেখ করেছেন।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফাহিম সালেহর জন্ম সৌদি আরবে। ২০০৯ সালে বেন্টলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশের পর তিনি ‘প্র্যাংকডায়েল’ নামের একটি অ্যাপ তৈরি করেন। জনপ্রিয় প্র্যাংকডায়েল অ্যাপ পরবর্তীতে প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলারের একটি ব্যবসায় পরিণত হয়।

বাংলাদেশে মোটরসাইকেলের রাইড শেয়ারিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে পাঠাও ছাড়ার পর নাইজেরিয়ায় ‘গোকাদা’ নামে একইরকম আরেকটি স্টার্টআপের উদ্যোগ নেন তিনি।